পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (অষ্টম সম্ভার).djvu/১৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পণ্ডিত মশাই তা সইতেই হবে ; কিন্তু রাগের মাথায় তোমার শাশুড়ীঠাকরুণকে যেন কটু কথা শুনিয়ে দিও না। তিনি অল্পেই বড় আঘাত পান । কুঙ্কম ক্রুদ্ধ চাপা গলায় ফিস্ ফিস্ করিয়া বলিল, আমি জস্থ নই, আমার সে বুদ্ধি আছে t বৃন্দাবন কহিল, সেও জানি, আবার বুদ্ধির চেয়ে রাগ তোমার ঢের বেশী তাও জানি । আর একটা কথা কুস্কম ! মা স্নান করেই চলে এসেচেন, এখনও পূজাআহ্নিক করেন নি । তাকে জিজ্ঞাসা করে, আগে সেই যোগাড়টা করে দাও গে । আমি চললুম। যাও, কিন্তু কোথাও গল্প করতে বসে যেও না যেন । বৃন্দাবন একটুখানি হাসিয়া বলিল, না । কিন্তু দেরি করে বকুনি খাবারও ভারী লোভ হচ্চে। আর একদিনের আশা দাও ত আজ না হয় শীগগির ক’রে ফিরে আসি । সে তখন দেখা যাবে, বলিয়া কুষম রান্নাঘরের ভিতরে যাইতেছিল, সহসা বৃন্দাবন একটা ক্ষুদ্র নিশ্বাস ফেলিয়া অতি মৃদুস্বরে বলিল, আশ্চৰ্য্য । একবার মনে হ’ল না যে, আজ তুমি এই প্রথম কথা কইলে । যেন কত যুগযুগান্তর আমাকে তুমি এমনই শাসন করে এসেচ–ভগবানের হাতে বাধা কি আশ্চৰ্য্য বঁাধন কুকুম । কুসুম দাড়াইয়া শুনিল, কিন্তু জবাব দিল না । বৃন্দাবন চলিয়া গেলে এই কথা স্মরণ করিয়া হঠাৎ তাহার সর্বশরীর শিহরিয়া উঠিল, সে রান্নাঘরের ভিতরে অসিয়া স্থির হইয়া বসিল । নিজের শিক্ষার অভিমানে যাহাকে সে এতদিন অশিক্ষিত চাষ মনে করিয়া গণনার মধ্যেই আনে নাই, আজিকার কথাবার্তা এবং এই ব্যবহারের পর, তাহারই সম্বন্ধে এক নূতন আনন্দে এক নূতন তৃষ্ণায় সে উৎস্থক হইয়া উঠিল । وي সেদিন সন্ধ্যার পূৰ্ব্বে বাটী ফিরিবার সময় বৃন্দাবনের জননী কুস্কমকে কাছে ভাকিয়া অশ্র-গদগদকণ্ঠে বলিলেন, বৌমা, কি আনন্দে যে সারাদিন কাটালুম, তা মুখে বলতে পারিনে। মুখী হও মা ! বলিয়া তিনি অঞ্চলের ভিতর হইতে এক জোড়া সোনার বালী বাহির করিয়া সহস্তে তাহার হাতে পরাইয়া দিলেন । আজিকার সমস্ত আয়োজন কুঙ্কম গোপনে বৃন্দাবনের সাহায্যে নিৰ্ব্বাহ করিয়াছিল, তাহা তিনি জানিতে পারিয়াছিলেন । বিশেষ করিয়া ইহাতেই তাহার হৃদয় আশায় ר אsל