পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (অষ্টম সম্ভার).djvu/১৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পণ্ডিত মশাই পরদিন পূর্য্যোদয়ের কিছু পরে মাতাপুত্র নদী হইতে স্নান করিয়া আসিয়াই দেখিল, একটা প্রৌঢ়া নারী প্রাঙ্গণের মাঝখানে দাড়াইয়া নানাবিধ প্রশ্ন করিতেছেন, এবং কুঞ্জনাখ সবিনয়ে যথাযোগ্য উত্তর দিতেছে। ইনি কুনাথের শাশুড়ী। শুধু কৌতুহলবশে জামাতার কুটারখানি দেখিতে আসেন নাই, নিজের চোখে দেখিয়া নিশ্চয় করিতে আসিয়াছেন, একমাত্র কন্যারত্বকে কোনদিন এখানে পাঠানে নিরাপদ কি-না ! হঠাৎ কুক্কমকে প্রবেশ করিতে দেখিয়া তিনি অবাক হইয়া তাহার মুখপানে চাহিয়া রছিলেন । তাহার সিক্ত বসনে যৌবন-শ্ৰী আটিয়া রাখিতে পারিতেছিল না। দেহের তথকাঞ্চন বর্ণ ভিজা কাপড় ফুটিয়া বাহির হইতেছিল। আদ্র এলো চুলের রাশি সমস্ত পিঠ ব্যাপিয়া জাহ পর্শ করিয়া ঝুলিতেছিল। তাহার বামকক্ষে পূর্ণ কলস, তান হাতে চরণের বাম হাত ধরা। তাহার হাতেও একটি ক্ষুদ্র জলপূর্ণ ঘটি। সংসারে এমন মাতৃমূৰ্ত্তি কদাচিৎ চোখে পড়ে এবং যখন পড়ে তখন অবাক হইয়াই চাহিয়া থাকিতে হয়। কুঞ্জনাথও ই করিয়া চাহিয়া আছে দেখিয়া কুকুমের লজ্জা করিয়া উঠিল, সে ব্যস্ত হইয়া চলিয়া যাইবার উপক্রম করিতেই কুঞ্জর শাশুড়ী বলিয়া উঠিলেন, এই কুষম বুঝি ? কুক খুশী হইয়া কহিল, ই মা, আমার বোন। সমস্ত প্রাঙ্গণটাই গোময় দিয়া নিকানো, তাই কুহুম সেইখানেই ঘড়াটা নামাইয়া রাখিয়া প্রণাম করিল। মায়ের দেখাদেখি চরণও প্রণাম করিল। তিনি বলিলেন, এ ছেলেটিকে কোথায় দেখেচি যেন । ছেলেটি তৎক্ষণাৎ আত্মপরিচয় দিয়া কহিল, আমি চরণ । ঠাকুরমার সঙ্গে আপনাদের বাড়িতে মামাবাবুর মেয়ে দেখতে গিয়েছিলুম। কুক্কম সস্নেহে তাহাকে কোলের কাছে টানিয়া বলিল, ছি, বাবা, বলতে নেই। মামীমাকে দেখতে গিয়েছিলুম বলতে হয়। কুঞ্জর শাশুড়ী বলিলেন, বেন্দ বোষ্টমের ছেলে বুঝি ? একফোট ছোড়ার কথা দেখ ! দারুণ বিশ্বয়ে কুস্কমের হাসি-মুখ এক মুহূর্তে কালি হইয়া গেল। সে একবার দাদার মুখের প্রতি চাহিল, একবার এই নিরতিশয় অশিক্ষিতা অপ্রিয়বাদিনীর মুখের প্রতি চাহিল, তার পর ঘড়া তুলিয়া লইয়া ছেলের হাত ধরিয়া রান্নাঘরে চলিয়া গেল। অকস্মাৎ একি ব্যাপার হইয়া গেল ! কুঞ্জ নিৰ্ব্বোৰ হইলেও শাশুড়ীর এত বড় কক্ষ কথাটা তাহার কানে বাজিল, বিশেষ ভগিনীকে ভাল করিয়াই চিনিত, তাহার মুখ দেখিয়া মনের কথা স্পষ্ট অল্পমান ›ፃፃ ما احساس ہجی!