পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (অষ্টম সম্ভার).djvu/১৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ পাঠিয়েছিলে কেন ? কুষম তখনও নিজেকে সামলাইয়া উঠিতে পারে নাই, জবাব দিতে পারিল না ! বৃন্দাবন পুনরায় জিজ্ঞাসা করিল, দাদার সঙ্গে দেখা করতে চিঠি লিখেছিলে, কৈ তিনি ? কুস্কম রুদ্ধ-স্বরে কহিল, মরে গেছে । আহা, মরে গেল ! কি হয়েছিল ? তাহার গষ্ঠীর স্বরে যে ব্যঙ্গ প্রচ্ছন্ন ছিল, এই দুঃখের সময় কুস্কমকে তাহা বড় বাজিল। সে নিজের অবস্থা ভুলিয়া জলিয়া উঠিয়া বলিল, দেখ, তামাসা করে! না। দেহ আমার জলে পুড়ে যাচ্ছে, এখন ওসব ভাল লাগে না। তোমাকে ডেকে পাঠিয়েচি বলে কি এমনি করে তার শোধ দিতে এলে ? বলিয়াই সে কাদিয়া ८फजिल ! তাহার চাপা-কান্না বৃন্দাবন স্পষ্ট শুনিতে পাইল, কিন্তু ইহা তাহাকে লেশমাত্র বিচলিত করিতে পারিল না। খানিক পরে জিজ্ঞাসা করিল, ডেকে পাঠিয়েচ কেন ? কুক্ষম চোখ মুছিয়া ভারি গলায় কহিল, না এলে আমি বলি কাকে ? আগে বরং নিজের কাজেও এ-দিকে আসতে যেতে, এখন ভুলেও আর এ-পথ মাড়াও না । বৃন্দাবন কহিল, ভুলতে পারিনি বলেই মাড়াইনে, পারলে হয়ত মাড়াতুম। যাক, কি কথা ? এমন করে তাড়া দিলে কি বলা যায় ? বৃন্দাবন হাসিল । তার পরে শাস্তকণ্ঠে কহিল, তাড়া দিইনি, ভালভাবেই জানতে চাচ্ছি। যেমন করে বললে স্ববিধে হয়, বেশ ত তুমি তেমনি করেই বল না। কুমুম কহিল, একটা কথা জিজ্ঞেস করব বলে আমি অনেকদিন অপেক্ষা করে আছি—আমি চুল এলো করে, পথে-ঘাটে রূপ দেখিয়ে বেড়াই, এ-কথা কে রটিয়েছে ? তাহার প্রশ্ন শুনিয়; বৃন্দাবন ক্ষণকাল অবাকৃ হইয়া থাকিয়া বলিল, আমি । তারপরে ? তুমি রটাবে এমন কথা আমি বলিনি, মনেও ভাবিনি, কিন্তু— কথাটা শেষ করিতে না দিয়াই বৃন্দাবন বলিয়া উঠিল, কিন্তু সেদিন বলেওছিলে, ভেবেওছিলে। আমি বড়লোক হয়ে শুধু তোমাদের জন্ম করবার জন্তেই মাকে নিয়ে ভাইদের নিয়ে খেতে এসেছিলুম—সেদিন পেরেচি, আজ আর পারিনে ? সে অপরাধের সাজা আমার মাকে দিতে তুমিও ছাড়নি! ՖԵՀ