পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (অষ্টম সম্ভার).djvu/২০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ ছেলের ভাল হয়, তাতে চাষা-ভূযোর ছেলের অধঃপথে যায়। তোমাদের সংস্রবে লেখাপড়া শিখলে চাষার ছেলে যে বাৰু হয়ে যায়, তখন অশিক্ষিত বাপ-দাদাকেও মানে না, শ্রদ্ধা করে না,—বিদ্যাশিক্ষার এই শেষ পরিণতির আশঙ্কা আমরা তোমাদের আচরণেই শিখি। কেশব, আগে জামাদের অর্থাৎ এই দেশের ছোটলোকদের আত্মীয় হতে শেখে, তার পর তাদের মঙ্গলকামনা করে, তাদের ছেলেপিলেদের লেখাপড়া শেখাতে যেয়ো । আগে নিজেদের আচার-ব্যবহারে দেখাও, তোমরা লেখাপড়া শেখা ভদ্রলোকেরা একেবারে স্বতন্ত্র দল নও, লেখাপড়া শিখেও তোমরা , দেশের অশিক্ষিত চাষা-ভূযোকে নেহাত ছোটলোক মনে কর না, বরং শ্রদ্ধা কর, তবেই শুধু আমাদের ভয় ভাঙবে যে, আমাদেরও লেখাপড়া শেখা ছেলের অগ্রদ্ধা করবে না এবং দল ছেড়ে, সমাজ ছেড়ে, জাতিগত ব্যবসা-বাণিজ্য কাজ-কৰ্ম্ম সমস্ত বিসর্জন দিয়ে, পৃথক হবার জন্তে উন্মুখ হয়ে উঠবে না । এ যতক্ষণ না করছ ভাই, ততক্ষণ জন্ম জন্ম অবিবাহিত থেকে হাজার জীবনের ব্রত কর না কেন, তোমার পাঠশালে ছোটলোকের ছেলে যাবে না । ছোটলোকেরা শিক্ষিত ভদ্রলোককে ভয় করবে, মান্ত করবে, ভক্তিও করবে, কিন্তু বিশ্বাস করবে না, কথা শুনবে না । এ সংশয় তাদের মন থেকে কিছুতেই ঘুচবে না যে, তোমাদের ভালো এবং তাদের ভালো এক নয়। কেশব ক্ষণকাল মৌন থাকিয়া বলিল, বৃন্দাবন, বোধ করি তোমার কথাই সত্যি। কিন্তু জিজ্ঞেস করি, যদি উভয়ের মধ্যে বিশ্বাসের বন্ধনই না থাকে, তা হলে আমাদের শত আত্মীয়তার প্রয়াসও ত কাজে লাগবে না ? বিশ্বাস না করলে, আমরা কি করে বোঝাবো, আমরা আত্মীয় কিংবা পর ? তার উপায় কি ? বৃন্দাবন কহিল, ঐ যে বললুম, আচার-ব্যবহারে । আমাদের ষোল-আনা সংস্কারই যদি তোমাদের শিক্ষিতের দল কুসংস্কার বলে বর্জন করে, আমাদের বাসস্থান, আমাদের সাংসারিক গতিবিধি, আমাদের জীবিকা অর্জনের উপায়, যদি তোমাদের সঙ্গে সম্পূর্ণ বিভিন্ন হয়, তা হলে কোনদিনই আমরা বুঝতে পারব না, তোমাদের নির্দিষ্ট কল্যাণের পন্থায় যথার্থ-ই আমাদের কল্যাণ হবে । আচ্ছা কেশব, পৈতে হবার পর থেকে সন্ধ্যা-আহ্নিক কর । , न ! জুতো পায়ে দিয়ে জল খাও ? थाहे । মুসলমানের হাতের রান্না ? প্রেজুডিস নেই। খেতে পারি। তা হলে আমিও বলতে পারি, ছোটলোকদের মধ্যে পাঠশালা খুলে তাদের ছেলেদের শিক্ষা দেবার সঙ্কল্প তোমার বিড়ম্বনা—কিংবা আরও কিছু বেশী—সেটা >蒂创