পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (অষ্টম সম্ভার).djvu/২৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ দিয়া চরণের অস্তিম-শয্যা দেখাইয়া দিয়া কহিল, ঐ চরণ শুয়ে আছে-যাও, নাও গে। কেশব, ইনি চরণের মা । বলিয়া ধীরে ধীরে অন্ধুত্ৰ চলিয়া গেল । পরদিন সকালবেলা কেহই যখন কুমের স্বমুখে গিয়া ও-কথা বলিতে সাহস করিল না, কুঞ্জনাথ পৰ্য্যন্ত ভয়ে পিছাইয়া গেল, তখন বৃন্দাবন ধীরে ধীরে কাছে আসিয়া বলিল, ওর মৃতদেহটা ধরে লাভ কি, ছেড়ে দাও, ওরা নিয়ে ষাকৃ। কুহুম মুখ তুলিয়া বলিল, ওদের আসতে বল, আমি নিজেই তুলে দিচ্ছি। তারপর সে যেরূপ অবিচলিত দৃঢ়তার সহিত চরণের মৃতদেহ শ্মশানে পাঠাইয়া দিল, দেখিয়া বৃন্দাবনও মনে মনে ভয় পাইল । S(t চরণের ক্ষুদ্র দেহ পুড়িয়া ছাই হইতে বিলম্ব হইল না। কেশব সেইদিকে চাহিয়া চাহিয়া সহসা ভয়ঙ্কর দীর্ঘশ্বাস ফেলিয়া চীৎকার করিয়া উঠিল—সমস্ত মিছে কথা । যারা কথায় কথায় বলে-ভগবান যা করেন মঙ্গলের জন্ত, তারা শয়তান, হারামজাদ, জোচ্চর ! বৃন্দাবন দুই হাটুর মধ্যে মুখ ঢাকিয়া অদূরে স্তব্ধ হইয়া বসিয়াছিল, ঘোর রক্তবর্ণ প্রান্ত দুই চোখ তুলিয়া ক্ষণকাল চাহিয়া দেখিয়া কহিল, শ্মশানে বাগ করতে নেই কেশব । প্রত্যুত্তরে কেশব উঃ'– বলিয়া চুপ করিল। ফিরিয়া আসিবার পথে বাগদীদের দুই-তিনটি ছেলে-মেয়ে গাছতলায় খেলা করিতেছিল, বৃন্দাবন থমকিয়া দাড়াইয়া একদৃষ্টে চাহিয়া রহিল। শিশুরা খেলার ছলে আর একটা গাছতলায় ছুটিয়া গেল, বৃন্দাবন নিঃশ্বাস ফেলিয়া বন্ধুর মুখপানে চাহিয়া বলিল, কেশব, কাল থেকে অহৰ্নিশি যে প্রশ্ন আমার মনের মধ্যে উঠেচে, এখন বোধ করি তার জবাব পেলাম - সংসারের একছেলে মরারও প্রয়োজন আছে । - কেশব এইমাত্র গালাগালি করিতেছিল, অকস্মাৎ এই অদ্ভুত সিদ্ধান্ত শুনিয়া श्रयांक झहेब्र! ब्रश्लि । বৃন্দাবন কহিল, তোমার ছেলে নেই, তুমি হাজার চেষ্টা করলেও আমার জালা বুঝবে না—বোঝা অসম্ভব। এ এমন জালা যে, মহাশক্রর জন্তও কেউ কামনা করে না। কিন্তু এরও দাম আছে কেশব এখন যেন টের পাচ্ছি, খুব বড়-রকমের দামই আছে। তাই বোধ হয়, ভগবান এরও ব্যবস্থা করেছেন। ३३♚