পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (অষ্টম সম্ভার).djvu/৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ মালতী অধোবদনে ঘাড় নাড়িয়া জানাইল, হয়েছে । আমি আজ বজরা খুলে দেব। পরপারে কলকাতা—তোমার যেখানে ইচ্ছা চলে যেতে পার । কথা শুনিয়া মালতীর চক্ষে জল আসিল ; কোন কথা কহিল না । স্বরেন্দ্রবাবু পার্থের কাগজখানা হাতে লইয়া বলিলেন, এখানে আমার একজন বন্ধু আছেন, এই পত্ৰখানা নিয়ে সন্ধান করে তার নিকট যাও, তিনি তোমার কোনরূপ উপায় করে দেবেন। টপ করিয়া একফোটা জল মালতীর চক্ষু হইতে পদতলে কাপেটের উপর পড়িল । স্বরেন্দ্রবাবু বোধ হয় তাহ দেখিতে পাইলেন। একটু থামিয়া বলিলেন, তোমার টাকাকড়ি বোধ হয় কিছু নাই ? মালতী ঘাড় নাড়িয়া বলিল, না । তা আমি জানতাম। এই নাও, বলিয়া মনিব্যাগ উপাধানের নিম্ন হইতে বাহির করিয়া তাহার পায়ের নিকট ফেলিয়া দিয়া বলিলেন, এতে যা আছে, কোনরূপ উপায় না হলেও এক বৎসর এতে তোমার স্বচ্ছন্দে চলবে ; তারপর ঈশ্বরের আশীৰ্ব্বাদে যা হয় ক’রো । আর একফোট জল কাপেটের উপর আসিয়া পড়িল । সেদিন উন্মত্ত ছিলাম, তাই জিজ্ঞাসা করেছিলাম, কার পাপে এমন ঘটল ? কিন্তু এখন জ্ঞান হয়েছে, এখন দেখছি আমারই পাপের এই ফল—তুমি নির্দোষ । আমার জয়াকে আমি মেরে ফেলেছি । কপালের উপর কয়েক বিন্দু ঘাম জমা হইতেছিল, তিনি হাত দিয়া তাহ মুছিয়া ফেলিয়া বলিলেন, ঢের হয়েছে—আর পাপ করল না ; কিছুদিন সৎপথে থেকে দেখি शनि श्थं *ांहे । মালতী দাড়াইয়া রহিল ; স্বরেন্দ্রবাবু পত্ৰখানা শেষ করিতে লাগিলেন। শেষ হইলে বলিলেন, এই নাও । খামবাজারে সন্ধান করে নিও, বোধ হয় এতে উপকার হবে। কম্পিত-হস্তে মালতী পত্ৰখানা তুলিয়া লইল । * স্বরেন্দ্রবাবু বলিলেন, টাকা নাও । সে তাহাও উঠাইল ; দ্বারের দিকে একপদ অগ্রসর হইল । স্বরেঞ্জবাবুর ভিতরটা কি একরকম করিয়া উঠিল ; বলিলেন, ধৰ্ম্মপথে থেকে— মালতী আর একপদ অগ্রসর হইল। এবার সুরেন্দ্রনাথের গলা কঁপিল—মালতী, সেদিনকার কথা বিশ্বত হয়ে— মালতী স্বারের হাতল ধরিয়া টানিল, দ্বার অৰ্দ্ধ উন্মোচিত হইল, মুরেন্দ্রনাথের গলা আরো কম্পিত হইল—অসময়ে, কষ্ট্রে পড়লে আমাকে স্মরণ করে । । trర్టీ