পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (একাদশ সম্ভার).djvu/১০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

छब्रिद्धशैन সরোজিনী আশ্চৰ্য্য হইয়া প্রশ্ন করিলেন, সতীশবাবু ডাক্তার বুঝি ? উপেন্দ্ৰ হাসিয়া বলিলেন, ইn । জ্যোতিব বলিলেন, না হে উপীন, শুধু স্কুলে পড়লে হবে না। কোন ভাল হোমিওপ্যাথের সঙ্গে যদি কিছুদিন ঘুরে বেড়াতে পারেন, তা হলেই কিছু শিখবেন। না হলে ঐ যে কথায় বলে, শতমারী সহস্ৰমারী— কেবল মেরেই বেড়াবেন । আমি একজন ভদ্রলোকের সঙ্গে জুটিয়ে দিতে পারি, কিন্তু কেমন বনিবনাও হয় বলা যায় না—তুমি ষে-রকম সার্টিফিকেট দিচ্ছ— উপেন্দ্র বলিলেন, লোক ভাল হলে নিশ্চয় বনবে, অন্যথায় রক্তারক্তি ঘটবে। সরোজিনী বিস্ময়ে চাহিয়া রহিলেন ; জ্যোতিষ বলিলেন, আরও ভাল । উপেন্দ্র বলিলেন, ভালই। ওকে চিনতে পেরে, ওর দোষগুণ সমস্ত বুঝে নিয়ে, যে ওর মন পাবে, সে বড় ভাল জিনিসটিই পাবে। কিন্তু পাওয়াই শক্ত । ও যে জটিল বা দুৰ্ব্বোধ তা নয়, বরং খুব সোজ, খুব স্পষ্ট। আমার মনে হয় এত স্পষ্ট বলেই মামুষে ওকে ভুল বোঝে । মতে অনৈক্য হলে আমরা যেখানে ভদ্রতার দোহাই পাড়ি এবং শিষ্টভাবে মতভেদ করে মন ভার করে চলে আসি, ও সেগানে হাতাহাতি করে মীমাংসা করেই আসে, মন ভার করে আসে না । ছেলেবেলা থেকে ওকে জানি, কখনও দেখিনি ওর মুখের কথা আর মনের কথা আলাদা হয়েছে। এত ভালবাসি এইজন্যেই। - - জ্যোতিষ হাসিতে লাগিলেন । বলিলেন, এইজন্যেই সাধারণের মাঝে নিয়ে চলাফের শক্ত বলছিলে ? জ্যোতিষের দিকে তখন উপেন্দ্রর মন ছিল না। র্তাহার কথাগুলো কানে গেলেও অন্তরে প্রবেশ করিল না । বাল্যবন্ধুর বিরুদ্ধে কাল রাত্রির ব্যবহার ও রূঢ় ভাষা তাহাকে ভিতরে ভিতরে ক্লেশ দিতেছিল, সেইজন্য কথায় কথায় মন তাহার গত দিনের অতি নিভৃত প্রদেশে প্রবিষ্ট হইয়া পড়িয়াছিল। কিশোর-দিনের ছোটবড় কলহ-বিবাদে বিভিন্ন পাড়ার সম ও অসম-বয়সীদের সহিত হাতাহাতি, পেটপেটি, বাদ-বিসংবাদ এবং আরও অনেক আপদ-বিপদে সৰ্ব্বত্র সতীশ তাহার মস্ত দেহ ও মন্ত জোর লইয়া তাহার পাশে আসিয়া দাড়াইয়াছে। সেইসমস্ত স্বত ও বিশ্বত কাহিনীর মাঝখানে আসিয়া হঠাৎ তাহার হৃদয় অত্যন্ত অমৃতপ্ত হইয়া উঠিল এবং জ্যোতিযের কথায় উপেন্দ্র যখন বলিলেন, হ্যা এইজন্যই। ঠিক এইজন্তই চিরকাল ওকে এত ভালবাসি। জ্যোতিষ ও সরোজনী উভয়েই বিক্ষিতমুখে চাহিয়া রছিলেন । এই অসংবদ্ধ কথার কেহই অর্থ গ্রহণ করিতে সমর্থ হইলেন না। কিন্তু দ্বিতীয় প্রশ্নেরও সময় রহিল না। নিঃশব্দে পর্দা সরাইয়া সতীশ প্রবেশ @● ”