পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (একাদশ সম্ভার).djvu/১২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চরিত্রহীন আচার-ব্যবহারও উপেক্ষা করিয়া চলিতেন। যে ডাক্তার হারানের চিকিৎসা করিতেছিল, সে যে কি আশায় বিনা ব্যয়ে ঔষধ-পত্ৰ যোগাইতেছে, কেন সংসারের অৰ্দ্ধেক ব্যয়ভারও বহন করিতেছে, ইহা তাহার অগোচর ছিল না। কিন্তু মৃতকল্প সস্তানের চিকিৎসার কাছে কোন অন্যায়কেই বড় করিয়া দেখিবার তাহার সাহস ছিল না, শিক্ষাও ছিল না। অধিকন্তু তিনি পুত্রবধূকে ভালবাসিতেন না। উপেন্দ্রও যে এই জালে ধীরে ধীরে আবদ্ধ হইতেছিল, তাহার অকাতর অর্থব্যয় এবং অক্লাস্ত সেবার গোপন উদেখা যে আশৈশব বন্ধুত্বকে অতিক্রম করিয়া নিঃশব্দে আর একস্থানে মূল বিস্তার করিতেছিল, এ-বিষয়ে তাহার সন্দেহও ছিল না, আপত্তিও ছিল না। কাল হইতে উপেন্দ্র আসে নাই। এই কথা অঘোরময়ী তৃহার ঘরের চৌকাঠের বাহিরে একখানা জীর্ণ মলিন বালাপোষ গায়ে দিয়া বসিয়া ভাবিতেছিলেন । 海 শীতের সূৰ্য্য তখনও অস্ত যায় নাই, কিন্তু এ-বাড়ির ভিতরটায় ইহারই মধ্যে অন্ধকারের ছায়া পড়িয়াছিল। স্থৰ্যদেব কখন উদয় হন, কখন অস্ত যান, স্বদিনেও সে সংবাদটা এ-বাটীর লোকে রাখে নাই, এখন দুঃখের দিনে তাহার সহিত প্রায় সমস্ত সম্বন্ধই বিচ্ছিন্ন হইয়া গিয়াছিল। অঘোরময়ী ডাকিলেন, বেীমা, সন্ধ্যেটা জেলে দিয়ে একবার বোস ত মা, একটা कुक्षं ब्रटिक् । - কিরণময়ী তাহারই ঘরের মধ্যে কাজ করিতেছিল, বলিল, এখনো সন্ধ্যে হয়নি মা, তোমার বিছানাটা পেতে দিয়েই যাচ্চি । অঘোরময়ী বলিলেন, আমার আবার বিছানা ! শোবার সময় আমিই পেতে নেব। না না, তুমি যাও মা, প্রদীপগুলো জেলে দিয়ে একটু ঠাণ্ডা হয়ে বসে। দিবারাত্রি খেটে খেটে দেহ তোমার আধখানি হয়ে গেল, সেদিকে একটু দৃষ্টি রাখা যে দরকার মা। বলিয়া একটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া চুপ করিয়া রছিলেন। অনতিকাল পরে বধু কাছে আসিয়া বসিতে গেলে, তিনি বাধা দিয়া বলিয়া উঠিলেন, আগে প্রদীপগুলো— বধু শ্ৰান্তভাবে বলিল, তুমি কেন ব্যস্ত হ’চ্চ মা, সন্ধ্যের এখনো চের দেরি আছে। অঘোরময়ী বলিলেন, তা হোক—নীচে যে অন্ধকার, একটু বেলা থাকতেই সিড়ির আলোটা জেলে দেওয়া ভাল ৷ এখনি হয়ত উপীন এসে পড়বে, কাল থেকে সে আসেনি—কৈ, বেীমা, এখনো তোমার ত গা-ধোয়া, চুল-বাধা, হয়নি দেখচি– কি কচ্ছিলে গা এতক্ষণ ? শ্বশ্ৰুর কণ্ঠস্বরে অকস্মাৎ এই বিরক্তির জাভাবে বিস্থিত বধু ক্ষণকাল তাহার মুখের } }}