পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (একাদশ সম্ভার).djvu/১৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

5ग्निज्जईौन সহিত এইটুকুকে মনের মধ্যে লালন করিতে লাগিল। আজ সতীশের মুখে উপেন্দ্রর অধঃপতনের ইতিহাস তাহার সমস্ত বক্ষ মাধুর্ঘ্যে ভরিয়া দিয়াছিল, আজ তাই যাহা কিছু এখানে আসিয়া পড়িল, তাহাই মধুর হইয়া কিরণময়ীকে অনিৰ্ব্বচনীয় রসে স্নিগ্ধ করিয়া দিতে লাগিল । ጏꬃ সে-রাত্রে সতীশ চলিয়া যাইবার পর বহুক্ষণ পৰ্য্যন্ত কিরণময়ী অন্ধকার বারান্দায় চুপ করিয়া বসিয়া থাকিয়া অবশেষে উঠিয়া গিয়া রান্নাঘরে প্রবেশ করিল এবং রান্না চাপাইয়া দিয়া পুনৰ্ব্বার স্তব্ধ হইয়া বসিল । তাহার বুকের মাঝখানে আজ সতীশ নিজের অজ্ঞাতসারে আসর বাধিয়া স্বরবালা প্রভৃতি অপরিচিত নর-নারীর দল আনিয়া এই যে এক অদ্ভূত নাটকের অস্পষ্ট অভিনয় শুরু করিয়া দিয়া সরিয়া গেল, নির্জন ঘরের মধ্যে একলাটি বসিয়া তাহাকে স্পষ্ট করিয়া দেখিবার লোভ একদিকে কিরণময়ীর যেমন প্রবল হইয়া উঠিতে লাগিল, অন্যদিকে কিসের অনির্দেশু শঙ্কায় তাহার হাত-পা চোখের দৃষ্টি তেমনি ভারী করিয়া দিতে লাগিল। এ যেন অন্ধকার রাত্রির ভয়ঙ্কর ভূতের গল্পের মত তাহাকে ক্রমাগত এক-হাতে টানিতে এবং আর হাতে ঠেলিতে লাগিল । এমনি করিয়া বিচিত্র স্বপ্ন-জালের মধ্যে সে যখন নিরতিশয় অভিভূত, তেমনি সময়ে জুতার পদশব্দে চমকিয়! চাহিয়া দেখিল, দ্বারের বাহিরেই ডাক্তার অনঙ্গমোহন আসিয়া দাড়াইয়াছেন । কিরণময়ী মাথার কাপড় অনেকখানি টানিয়া দিয়া উঠিয়া দাড়াইল, ডাক্তার ইহা দেখিয়া ভ্ৰকুট করিলেন। ইতিপূৰ্ব্বে এই ডাক্তারটি ঠিক এই জায়গায় অনেকবার আসিয়া দাড়াইয়াছেন এবং পদ্মহস্তের রান্নার লোভে অতিথি হইবার আবেদন জানাইয়া পুনঃ পুনঃ রহস্ত করিয়া গিয়াছেন, সেই পুরাতন পরিহাসের পুনরাবৃত্তির কল্পনা করিয়াই কিরণময়ীর সমস্ত চিত্ত তিক্ত হইয়া উঠিল। সে কঠিন হইয়া তাঁহারই প্রতীক্ষা করিয়া দাড়াইয়া রহিল । কিন্তু ডাক্তার বৃহস্ত করিলেন না, কুদ্ধ গম্ভীর-মুখে কিছুক্ষণ চুপ করিয়া থাকিয়া বলিলেন, দশ-বারে দিন বাইরে থাকতে হয়েছিল বলে হারানবাবুর জন্য বড় চিন্তিত হয়েছিলুম, কিন্তু এসে দেখচি উদ্বেগের কিছুমাত্র কারণ ছিল না। । কিরণময়ী ঘাড় নাড়িয়া কহিল, না, উনি ভালই ছিলেন । ১ই ১