পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (একাদশ সম্ভার).djvu/২০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চরিত্রহীন —তোমরা যাকে পশুরাজ বলে তামাস কর, সেই স্বরবালাই আমার গুরু। তুমি ধা শেখালে, তিনি তাই ভুলিয়ে দিতে চাইলেন। তিনি আমার নমস্ত । উপেন্দ্র মৌন হুইয়া বসিয়া রহিল। কিরণময়ী কহিতে লাগিল, তোমাকে বার বার বলচি ঠাকুরপো, আজ যে তোমার পায়ে আমার লজ্জ-সরমের সমস্ত জঞ্জাল জলাঞ্জলি দিলুম, তার সমস্ত ফলাফল জেনেই। আমি জানি তোমার স্বরবালা আছে। আর আছে তোমার নিষ্ঠুর কঠিন পবিত্রতা। সে স্ফটিকের মত স্বচ্ছ, বজের মত শক্ত। তার গায়ে দাগ দিতে পারি, সে আমার সাধ্য নয়। কিন্তু জান ত ঠাকুরপো, মানুষের এমনি পোড়া স্বভাব, যা তার সাধ্যাতীত, তাতেই তার সবচেয়ে লোভ। ভগবানকে পাওয়া যায় না বলেই মানুষ এমন করে সব দিয়ে তাকে চায় । তাই আমার মনে হয়, তুমি আমার এতবড় অপ্রাপ্য বস্তু না হলে বোধ করি তোমাকে এত ভাল আমি বাসতুম না। কিন্তু ধাক সে কথা । ক্ষণকাল নীরব থাকিয়া সংসা একটা নিশ্বাস ফেলিয়া কিরণমূী কহিল, এক লব্যের যেমন ক্রোণ গুরু, আমার তেমনি স্বরবালা । কিন্তু কেমন করে হ’লো, সেই কথাটা জানিয়ে তোমাকে আজ ছুটি দেব । ঐ যেখানে তুমি খেতে বসেচ ঠাকুরপো, একদিন রাত্রে সতীশঠাকুরপোও তেমনি খেতে বসেছিলেন। কিসে মনে নেই, হঠাৎ তোমাদের কথা উঠে পড়ল। জান ত, ভাইটি আমার তোমাদের কথায় একেবারে মেতে ওঠেন। তখন তাকে সামলানোই শক্ত । আমার নিজেরও তখন প্রায় সেই দশা । ভালবাসার মদ তখন সবেমাত্র পাত্র ভরে খেয়ে তোমার নেশায় তখন আমার হাত-পা অবশ, দুই চক্ষু ঢুলে আসচে, এমনি সময়ে সতীশঠাকুরপো কত নজীর কত দৃষ্টান্ত দিয়ে বললেন, তুমি তোমার স্বরবালাকে কত ভালবাসে। কবে তুমি তার পান-বসন্ত হলে আহার-নিদ্রা ত্যাগ করেছিলে, কবে সে তোমার একটুখানি মাথা ধরা নিয়ে সারারাত্রি পাখা হাতে শিয়রে বলে কাটিয়েছিল—এমনি কত দিনরাতের কত ছোটখাটো কাহিনী । তার ত সে-সব শোনা-কথা। হয়ত বা কোনটা মিথ্যে, না হয় ত বাড়ানো, কিন্তু তাতে আমাদের দুজনের কারো কোন ক্ষতি হ’লো না। তোমাদের স্ত্রী-পুরুষের মধ্যে যে প্রেমের গঙ্গা বয়ে যাচ্ছে, আমরা দুটি ভাই-বোনে দেখতে দেখতে যেন তাতে ডুবে তলিয়ে গেলুম। তার পর অনেক রাত্রিতে সতীশ বাসায় চলে গেলেন, আমি কিন্তু এই রান্নাঘরে ৰসে রইলুম। কতক্ষণ জানিনে, বেরিয়ে দেখি স্বমুখেই শুকতারা । আমার হঠাৎ মনে হ’লো স্বরবালার মুখখানি যেন, এমনি । এমনি মধুর, এমনি উজ্জল। ঠিক এমনিধারাই বুঝি তার মুখ থেকে চোখ ফেরান যায় না। মনে মনে তাকে বললুম, তোমাকে ত দেখিনি তুমি কেমন ; किरू ८धशनहे शe, আজ থেকে তুমি হলে আমার গুরু। তোমার কাছ থেকে আমি স্বামীপ্রেমের পাঠ Soo