পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (একাদশ সম্ভার).djvu/২৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

छद्धिंखशैन কৰিয়া থাকিয়া বলিয়াছিল, অথচ, এই সীমা কোনো সমাজেই চিরদিন একটিমাত্র স্থানেই আবদ্ধ থাকে না ; প্রয়োজন মত সরে বেড়ায় । দিবাকর জিজ্ঞাসা করিয়াছিল, কে সরায় ? কিরণময়ী বলিয়াছিল, কেউ সরায় না। যে নিয়মে বিশ্ব-ব্রহ্মাও সরে, সেই নিয়মে এও আপনি সরে । সরেচে কি না তখন টের পাওয়া যায়, যখন কেউ একে আঘাত করে । এতক্ষণ পৰ্য্যস্ত দিবাকর কিরণময়ীর যুক্তি-তর্কের সমস্তটাই এই পালানোর জxকুলে মিলাইয়া লইতে গিয়া মনের মধ্যে বাধাই পাইতেছিল। একে ত এই কাজটাকে যংগরোনাস্তি গৰ্হিত বলিয়া তাহার লেশমাত্র সন্দেহ ছিল না, এবং সমস্ত অপরাধই সে সবিনয়ে গ্রহণ করিবার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করিতেছিল, যখন সে স্পষ্ট বুঝিতে পারিল, এই গৰ্ব্বিত নারী এতবড় অপরাধকেও অপরাধ লিয়া গণ্য করিতে চাহে না, বরঞ্চ সমাজকেই দোষী করিতে চায়, তখন তাহার অসহ বোধ হইয়াছিল, অথচ শক্ত কথা বলাও তাহার পক্ষে অত্যন্ত শক্ত। তাই সে শুধু একটুখানি বিদ্ধপ করিয়া কহিয়াছিল, এই যেমন সমাজকে আমরা আঘাত করলুম! এখন দেখা যাক, কতখানি দৰ্প আর কতখানি মোহ সমাজের ছোটে ! কি বল বৌদি ? কিরণময়ী দুই কচুয়ের উপর ভর দিয়া উচু হইয়া দিবাকরের প্রতি চাৰিয়া জবাব দিয়াছিল, আমরা আঘাত করলুম কৈ ঠাকুরপো ? ভরে পালিয়ে বাওয়া, আর দাড়িয়ে ঘা দেওয়া কি এক জিনিস যে এতে সমাজের দর্প চূর্ণ হবে ? এতে দর্পত তার বেড়েই যাবে। কিন্তু তুমি বি এ পর্যন্ত পড়েচ না ? বলিয়া গায়ের চাদরটা মাথা পৰ্য্যস্ত টানিয়া দিয়া সে গুইয়া পড়িয়ছিল। বাহিরে মন্দীভূত ঝড়ের চাপা-কান্না ভেদ করিয়া জাহাজের ঘণ্টায় বারটা বাজিয়া গেল। ডেকের একটা চেয়ারের উপর দীর্ঘশ্বাস বুকে করিয়া দিবাকর চুপ করিয়া বসিয়াছিল, হঠাৎ ধরা গলার ডাক আসিল, ঠাকুরপো । দিবাকর চমকিয়া উঠিল। তাড়াতাড়ি সাড়া দিল, কেন বৌদি ? কিরণময়ী কছিল, তুমি ফিরেই যাও। দিবাকর জোর দিয়া বলিল, কিছুতেই না । কিরণময়ী কহিল, না কেন ? না বুঝে একটা অন্যায় করেচ । বুঝতে পেরেও তার প্রতিকার করবে না, পাপের বোঝা বয়ে বেড়াবে, আমি ত তার প্রয়োজন দেখিনে ঠাকুরপো । দিবাকর কহিল, তুমি দেখ না, আমি দেখি। তা ছাড়া ফিরে গেলেই কি পাপের বোঝা নেমে বাবে বৌদি ? • * ३€ ¥