পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (একাদশ সম্ভার).djvu/৩১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চরিত্রহীন অপরাহ্লবেলায় গুরুবাব আসিয়া সতীশের মাথায় শাস্তিবায়ি সিঞ্চন করিয়া কমণ্ডুল দেখাইয়া হাস্যপূর্বক কছিলেন, এর ওপর ত যমের অধিকার নেই। তা ছাড়া, তুমি যে মূলাধার, তুমি না থাকলে যে সব পণ্ড । or গুরুজীর কথা সতীশ অগ্রাহ করিত না, তাই নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধেই রাজি হইল । বস্তুতঃ, বেহারীকে বিদায় করার পর হইতে সমস্ত কথা মনে মনে আলোচনা করিয়া এ-সব তাহার কিছুষ্ট ভাল লাগিতেছিল না। যদিচ, কোনমতেষ্ট তাঁহার বিশ্বাস হয় না যে, বেহারী একেবারে চলিয়া গিয়াছে, আর আসিবে না, তথাপি যত শীঘ্র হয় তাহাকে ফিরিয়া পাইবার জন্য প্রাণ তাহার ব্যাকুল হটয়া উঠিয়াছিল । তা ছাড়া, আরও একটা চিন্তা তাহাকে ভিতরে ভিতরে যাতনা দিতেছিল। কি জানি, বেহারী নিজের বাড়িতেষ্ট গেছে, কিংবা তাহদের পশ্চিমের বাড়িতেষ্ট গেছে ; গিয়া সমস্ত ব্যাপার প্রচার করিয়া কি একটা বিশ্ৰী কাও বাধাইবার চেষ্টায় আছে, কিংবা আর কোন মতলব করিতেছে । যাই হোক, তাহাকে আবার চোখে না দেখা পৰ্য্যম্ভ সতীশ কিছুতেই সুস্থির হইতে পারিতেছিল না । - সন্ধার পূৰ্ব্বেই দ্বিতলের ঘরটিতে সমবেত হইয়া দুই-এক পাত্র সেবন করার পর সতীশের সেই নিজাব ভাবটা কাটিয়া গিয়াছিল। কিন্তু তবুও অন্তরে পীড়ার গ্লানি তাহাকে ভিতরে ভিতরে পীড়াই দিতেছিল। ঠিক এমনিই সময়ে পাশের ঘরে অকস্মাৎ লেহরীর গলা শুনিতে পাইয়া সতীশ পুলকিত-বিস্ময়ে চঞ্চল হুইয়া উঠিল। হাক দিয়া ডাকিল, বেহারী না কি রে ? বেহারী দ্বারের কাছে আসিয়া সসন্ত্রমে সাড়া দিল, অজ্ঞে । গুরুবাবা’র মুখ কালি হইয়া গেল। কহিলেন, এ ব্যাট আবার ফিরে এলো না কি বাবা ? তা শাল ও-ঘরে ঢুকেচে কেন ! এই ঘরেই তাদের নিশীথ-চক্রের আয়োজন চলিতেছিল। সতীশ এ-সকল প্রশ্নের উত্তর না দিয়া বেহারীকে জিজ্ঞাসা করিল, তুই বাড়ি গিযেছিলি না কি রে ? বেহারী কহিল, আজ্ঞে না, আমি কাশী গিয়েছিলুম। কাশী ? কাশীতে কেন ? মাকে আনতে । সতীশ চমকিয়া উঠিল। বেহারী কাহাকে যে 'মা' বলে সতীশ তাহা জানিত । কহিল, সে কাশীতে থাকে না কি ? আজ্ঞে ই ৷ তুই তার ঠিকানা জানতি ? eeא