পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (একাদশ সম্ভার).djvu/৩২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

छबिशैन না বলিয়া প্রথম রাত্রে তাহাকে একখানা ছোট-রকম হোটেলে আশ্রয় লইতে হইয়াছিল। ইচ্ছা ছিল পরদিন সকালে একটা ভাল জায়গা অনুসন্ধান করিয়া লইবে । স্বত্বাধিকারী ভুবন মুখুয্যে মহাশয় কিন্তু খাতির-যত্বের অবধি রাখিলেন ন—আলাদা ঘরে বিছানা করিয়া দিলেন, এমন কি, যতদিন খুশি এখানে থাকিলেও যত্নের ক্রটি হুইবে না ভরসা দিলেন । লকালে একজন প্রৌঢ়-গোছের স্ত্রীলোক ঘর বাট দিতে আসিয়া উপেক্সকে বার বার নিরীক্ষণ করিয়া অবশেষে বঁটাটা ফেলিয়া গড় হইয়া প্ৰণাম করিয়া কহিল, বাবুর কি কোন ব্যারাম হয়েছিল ? বডড রোগ দেখচি যে ! সে চেহারা নেই, সে বর্ণ নেই— উপেন্দ্র বিস্ময়াপন্ন হইয়া জিজ্ঞাসা করিল, তুমি আমাকে চেন নাকি ? স্ত্রীলোকটি কছিল, আমি যে মোক্ষদা বাবু, আপনাকে চিনিনে ? o উপেন্সর মনে পড়িল, এ সেই মোক্ষদা, যে বন্ধকাল পূৰ্ব্বে সতীশের বাড়িতে চাকরি করিত। কহিল, তুমি এখানে চাকরি কর বুঝি ? মোক্ষদা সলজ্জভাবে কহিল, না—হা—তা একরকম চাকরি করা বই কি । মুখুয্যেমশাই বললে, আর কলকাতায় পড়ে থাকা কেন, বরং চল কোন তীর্থস্থানে গিয়ে থাকি গে । যা হোক একটা হোটেল-টোটেল করে— উপেক্স বাধা দিয়া কহিলেন, তা হোটেল চলচে ভাল ? তাহার বিরক্তি মোক্ষদার দৃষ্ট এড়াইল না। কহিল, অমনি চলে যাচ্ছে। তা বাবু, এই বয়সে আমার চাকরি করতেই বা হবে কেন ? আর মুখুয্যেরই বা ছায়া মাড়াতে হবে কেন ? মেয়েটাকে ধরতে গেলে আমিই ত একরকম মানুষ করলুম। মালী বলে ডাকত, সত্যিকারের মাসীর মতই তাকে বুকে করে রেখেছিলুম, এ না জানে কে ? সাবি বললে, মালী, এ-সব করব না, আমি চাকরি করে মাসী-বোনঝির পেট চালাব। তাই সই। বাবুদের মেসের বাসায় চাকরি করে দিলুম, বাবুর ঝি বলে ভাবত না, বাড়ির গিল্পী বলে মানত । না যাবে সে, না আজ আমাকে এ-সব করতে হবে। কিন্তু যাই বল বাবু, আমি সত্য কথা বলব,—আমাদের ছোটবাৰু হতেই ত আজ আমার এত দুঃখ । উপেন্দ্র উংস্থক হইয়া প্রশ্ন করিলেন, ছোটবাবু কে ? আমাদের সতীশ ? মোক্ষা ঘাড় নাড়িয়া কহিল, ই । ছড়ি কি চোখেই যে ছোটবাবুকে দেখলে, তার জন্তে সৰ্ব্বৰ ত্যাগ করলে! আর তাই, ছোটবাবুকেই কি ধরা-ছোয়া দিলে ? তাও দিলে না। বিপিনবাবু লক্ষপতি জমিদার। আমার বাসায় রাত নেই, দিন নেই, ছাটাইটি কাদাকাটি করে পায়ের তলা ক্ষইয়ে ফেললে। সোনা রূপা জড়ওয়া গয়নায় দশ হাজার টাকা ধরে দিতে চাইলে, কিন্তু ছড়ি ত তার মুখ পৰ্য্যপ্ত দেখলে We?&