পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (একাদশ সম্ভার).djvu/৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ না—সময় নেই। - মহেশ্বরী বলিলেন, তবে কলেজ থেকে একটু সকাল করে ফিরে আসিস্—ও বামুনঠাকুর, দিবাকয়বাবু জন্যে যেন সমস্ত ঠিক থাকে। দিবাকর উত্তর না দিয়া চলিয়া গেল। তাহার বাহিরের ছোট ঘরটিতে ফিরিয়া আসিয়া কাপড় পরিতে পরিতে চোখে জল আসিয়া পড়িল । সামনের বৈঠকখানা হইতে তখনও পাশা-খেলার হুঙ্কায় শোনা যাইতেছিল। হঠাৎ দ্বারের কাছে শব্দ শুনিয়া পিছন ফিরিয়া দেখিল, বি দাড়াইয়া আছে । তাড়াতাড়ি জামার হাতায় চোখ মুছিয়া জিজ্ঞাসা করিল, কি ? কি কহিল, ছোটবেীমা একবার ডাকচেন । যাচ্ছি, তুমি যাও। বি চলিয়া গেলে দিবাকার ছোটাে টাইম্পিসটির পানে চাহিয়া মুহূৰ্ত্তকাল ইতস্তত: করিয়া বঁ হাতের বইগুলা টেবিলের উপর রাখিয়া দিয়া জামার হাতায় আর একবার ভাল করিয়া চোখ মুছিয়া লইয়া ভিতরে ফিরিয়া গেল । -- দিবাকরকে ডাকিতে পাঠাইয়া স্বরবালা নিজের ঘরের স্বমুখেই অপেক্ষা করিতেছিল। দিবাকর কাছে আসিয়া বলিল, কি ? স্বরবালা প্রকাশ্যে কথা কহিত না, আড়ালে কহিত । মাথার কাপড়টা আরো একটু টানিয়া দিয়া বলিল, একবার ঘরে এস ; বলিয়াই ঘরে ঢুকিয়া দেখাইয়া দিল— মেঝের উপর আসন পাতা, একবাটি দুধ এবং রেকাবিতে দুই-চারটি সন্দেশ– দেখাইয়া দিয়া বলিল, খেয়ে তবে ইস্কুলে যাও। দিবাকার কোন কথা না বলিয়া খাইতে বসিয়া গেল। অদূরে শয্যার উপর তাহার ছোটদাদা উপেন্দ্রনাথ তখনও নিদ্রিতের মত পড়িয়া ছিলেন, দিবাকর খাইয়া চলিয়া যাইতেই মাথা তুলিয়া স্ত্রীকে ভাকিয় বলিলেন, এ আবার কি ? স্বরবালা খাবার জায়গাটা পরিষ্কার করিয়া ফেলিতেছিল, চমকিয়া জিজ্ঞাসা করিল, তুমি জেগে আছ নাকি ? ঘন্টা-দুই। এগারোটা পৰ্য্যন্ত মানুষে ঘুতে পারে ? স্বরবালা হাসিয়া কছিল, তুমি সব পার। নইলে মানুষে কি এগারোটা পৰ্য্যন্ত পড়ে থাকতে পারে ? - উপেক্স কহিলেন, সকলে পারে না, কিন্তু আমি পারি। তার কারণ, গুয়ে থাকার মত ভাল জিনিস সংসারে আমি দেখতে পাইনে। সে যাই হোক, , দিবাকরের—