পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (একাদশ সম্ভার).djvu/৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ তিরষ্কার তাহাকে তপ্তশেলে বিধিতে থাকিলেও তাহার উচ্চশিক্ষিত ভদ্র-অন্তকরণ সতীশের এই গোয়েন্দাগিরির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করিয়া উঠিল। সে যে অন্যায় উত্তেজনার দ্বারা কি একটা গুপ্ত রহস্ত টানিয়া বাহির করিবার চেষ্টা করিতেছিল, ইহা তিনি বুঝিয়াছিলেন। সতীশকে বাধা দিয়া কিরণময়ীকে বলিলেন, কেন আপনি সতীশের পাগলামীতে কান দিয়ে নিজেকে উদ্বিগ্ন করচেন ! স্বামীর বিষয় থেকে বঞ্চিত করবার অধিকার কারো নেই—আপনি নিশ্চিন্ত হোন । তবে বোধ করি, আপনাদের বিশেষ সুবিধা হবে মনে করেই হারানদা একটা লেখাপড়ার কথা তুলেচেন। কিন্তু আপনার অমতে তা কোনমতেই হতে পারবে না। রাত্রি অনেক হয়েছে, কপাট বন্ধ করে দিন। চল সতীশ, আর দেরি করিনে। সতীশকে ঠেলিয়া দিয়া গলির মধ্যে দাড়াইয়া মৃদ্ধ হাসিয়া বলিলেন, কাল-পরশু আবার দেখা হবে--নমস্কার । ১৩ সেই জনশূন্ত গলি হইতে নিষ্ক্রান্ত হইয়া দুইজনে একটা ভাড়াটে-গাড়তে উঠিয়া বসিলেন এবং খোলা জানালার ভিতর দিয়া রাস্তার মন্দীভূত জনস্রোতের পানে নীরবে চাহিয়া রহিলেন । কথা কহিবার মত মনের অবস্থা কাহারও ছিল না। উপেন্দ্র ব্যথিত-চিত্তে ভাবিতে লাগিলেন, কালই বাড়ি ফিরিয়া যাইব । ভাল হোক, মন্দ হোক, আমার হাত দিবার প্রয়োজন নাই। শুধু ফিরিবার পূর্বে এইটুকু দেখিয়া যাইব যে হারানদার চিকিৎসা হইতেছে—তার পরে ? তার পরে আর কিছুই নয়—আট বৎসর যে লোক মনের বাহিরে পড়িয়াছিল, সে বাহিরেই পড়িয়া থাকিবে । এই বলিয়া দেহ-লগ্ন কীট-পতঙ্গের ন্যায় এই বিরক্তিকর চিন্তাকে গা-ঝাড়া দিয়া সবেগে দূরে নিক্ষেপ করিয়া উপেন্দ্র গাড়ির মধ্যেই একবার নড়িয়া চড়িয়া বসিলেন। সতীশকে ভাকিয়া বলিলেন, সতীশ, একটা চুরুট দে ত রে, ভারী ঠাণ্ড । সতীশ পকেট হইতে চুরুট প্রভৃতি বাহির করিয়া হাতে দিয়া তেমনি বাহিরের দিকে চাহিয়া রহিল, কথা কহিল না । উপেন্দ্র চুরুট ধরাইয়া লইয়া পুনঃ পুনঃ মোগার করিতে করিতে সতীশকে শুনাইয়া বলিলেন, ভিতরের অন্ধকার যেন এমনি করে ধুয়োর মত বার হয়ে যায়। সতীশ সায় দিল না। ’ বড়, ঝড়, করিয়া ভাড়াটে গাড়ি পরিচিত অপরিচিত রাস্তাগলি ঘর-বাড়ি 氰