পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (চতুর্থ সম্ভার).djvu/১১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঐীকান্ত বঁাচে না । জীবনের এই একান্ত প্রয়োজনের সহজ ও সক্রিয় সজীবতা কতদিন কত সঙ্কট হইতে তাহাকে রক্ষা করিয়াছে সে-কথা কাহারো জানিবার উপায় নাই। নিজে সে বলিবে না—জানিয়াও লাভ নাই। আমি শুধু জানি, যে রাজলক্ষ্মীকে একদিন ন চাহিয়াই দৈবাৎ পাইয়াছি, আজ সে আমার সকল পাওয়ার বড়। কিন্তু সে-কথা এখন থাক । তাহার যতকিছু কঠোরতা সে কেবল নিজেকে লইয়া, অথচ অপরের প্রতি জুলুম ছিল না । বরঞ্চ হাসিয়া বলিত, কাজ কি বাপু অত কষ্ট করার ! একালে অত বাচতে গেলে মানুষের প্রাণ বঁাচে না। আমি যে কিছুই মানি না সে জানে। শুধু তাহার চোখের উপর ভয়ঙ্কর একটা কিছু না ঘটিলেই সে খুশী । আমার পরোক্ষ অনাচারের কাহিনীতে কখনো বা সে দুই কান চাপা দিয়া আত্মরক্ষা করে, কখনো বা গালে হাত দিয়া অবাক হইয়া বলে, আমার অদৃষ্টে কেন তুমি এমন হলে । তোমাকে নিয়ে আমার যে সব গেল ! কিন্তু আজিকার ব্যাপারটা ঠিক এরূপ নয়। এই নির্জন মঠে যে কয়টি প্রাণী শাস্তিতে বাস করে তাহারা দীক্ষিত বৈষ্ণব-ধৰ্ম্মাবলম্বী । ইহাদের জাতিভেদ নাই, পূৰ্ব্বাশ্রমের কথা ইহার কেহ মনেও করে না । তাই, অতিথি কেহ আসিলে ঠাকুরের প্রসাদ নিঃসঙ্কোচ-শ্রদ্ধায় বিতরণ করে এবং প্রত্যাখ্যান করিয়াও আজও কেহ ইহাদের অপমানিত করে নাই। কিন্তু এই অপ্রীতির কার্য্যই আজ যদি অনাহূত আসিয়া আমাদের দ্বারাই সংঘটিত হয় ত পরিতাপের অবধি রহিবে না। বিশেষ করিয়া আমার নিজের । জানি, কমললতা মুখে কিছু বলিবে না, তাহাকে বলিতেও দিবে না— হয়ত বা শুধুমাত্র একটিবার আমার প্রতি চাহিয়াই মাথা নীচু করিয়া অন্যত্র সরিয়া যাইবে । নিৰ্ব্বাক অভিযোগের জবাব যে কি, এইখানে দাড়াইয়া মনে মনে আমি ইহাই ভাবিতেছিলাম। এমনি সময়ে পদ্মা আসিয়া বলিল, এসো নতুনগোঁসাই, দিদিরা তোমাকে ডাকচে । হাতমুখ ধুয়েচ ? নী । তবে এস আমি জল দিই। প্রসাদ দেওয়া হচ্ছে । প্রসাদটা কি হ’লো আজ ? আজ হ’লো ঠাকুরের অন্নভোগ । মনে মনে বলিলাম, তবে ত সংবাদ আরও ভালো । জিজ্ঞাসা করিলাম, প্রসাদ কোথায় দিলে ? পদ্মা বলিল, ঠাকুরঘরের বারান্দায় । বাবাজীমশায়ের সঙ্গে তুমি বসবে, আমরা মেয়েরা খাব পরে । আজ আমাদের পরিবেশন করবে রাজলক্ষ্মীদিদি নিজে । } a & • دسasf