পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (চতুর্থ সম্ভার).djvu/১২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্রীকান্ত তিনকাল গিয়ে এককালে ঠেকেচে, পারলে কি আর এটুকু করিনে ? গহর কি আমার পর ? সে যে আমার ছেলের মত রে! নবীন কহিল, সে-সব আমি জানিনে, তোমাকে শেষবারের মত বলচি, বাবুর কাছে আমাকে নিয়ে যাবে ত চল, নইলে যেদিন তার মন্দ খবর পাব সেদিন রইলে তুমি আর আমি। o চক্রবর্তী প্রত্যুত্তরে ললাটে করাঘাত করিয়া শুধু বলিলেন, কপাল নবীন, কপাল! নইলে তুই আমাকে আমন কথা বলিস। অতএব, পুনরায় দু’জনে ফিরিয়া আসিলাম । বাটীর বাহিরে দাড়াইয়া আমি ক্ষণকাল আশা করিলাম অনুতপ্ত চক্রবর্তী যদি এখনো ফিরিয়া ডাকে । কিন্তু কোন সাড়া আসিল না, দ্বারের ফাক দিয়া উকি মারিয়া দেখিলাম চক্রবর্তী পোড় কলিকাটি ঢালিয়া ফেলিয়। নিবিষ্টচিত্তে তামাক সাজিতে বসিয়াছে । গহরের সংবাদ পাইবার উপায় চিন্তা করিতে করিতে আখড়ায় ফিরিয়া আসিয়া যখন পৌছিলাম তখন বেলা প্রায় তিনটা । ঠাকুর-ঘরের বারান্দায় মেয়েদের ভিড় জমিয়াছে ; বাবাজীরা কেহ নাই, সম্ভবতঃ স্বপ্রচুর প্রসাদসেবার পরিশ্রমে নিজাব হইয়া কোথাও বিশ্রাম করিতেছেন ; রাত্রিকালে আর একদফা লড়িতে হইবে তাহার বলসঞ্চয়ের প্রয়োজন ৷ ” উকি মারিয়া দেখিলাম ভিড়ের মাঝখানে বসিয়া এক গণক ; পাজি, পুথি, খড়ি, শেলেট, পেন্সিল প্রভৃতি গণনার যাবতীয় উপকরণ তাহার কাছে । আমার প্রতি সৰ্ব্বাগ্রে চোখ পড়িল পদ্মার, সে চেচাইয়া উঠিল, নতুনগোঁসাই এসেচে। কমললতা বলিল, তখনি জানি গহরগোসাই তোমাকে এমনি ছেড়ে দেবে না, কি খেলে সে- - রাজলক্ষ্মী তাহার মুখ চাপিয়া ধরিল—থাক্ দিদি, ও আর জিজ্ঞাসা ক’রো না। কমললত তাহার হাত সরাইয়া দিয়া বলিল, রোদরে মুখ শুকিয়ে গেছে, রাজ্যের ধুলোবালি উঠেচে মাথায়—শ্নানটান হয়েচে তো ? v রাজলক্ষ্মী বলিল, তেল ছোন না, হলেও ত বোঝা যাবে না দিদি । অবগু সৰ্ব্বপ্রকার চেষ্টাই নবীন করিয়াছে, কিন্তু আমি স্বীকার করি নাই, অক্ষাত অভুক্তই ফিরিয়া আসিয়াছি! রাজলক্ষ্মী মহানন্দে কহিল, গণকঠাকুর আমার হাত দেখে বলেচে আমি রাজরাণী হবো । কি দিলে ? পদ্মা বলিয়া দিল—পাচ টাকা। রাজলক্ষ্মীদিদির অর্ণচলে বাধা ছিল । আমি হাসিয়া বলিলাম, আমাকে দিলে আমি তার চেয়েও ভালো বলতে পারতাম। >>9 १र्थ-५४