পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (চতুর্থ সম্ভার).djvu/১২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্ত্রীকান্ত জালিয়া টাকা চাহিয়া পাঠাইলে তিনি কর্জের চতুগুণ ফিরাইয়া দিয়াছেন। এই আমার সম্বল । সেটা কত ? আমার পক্ষে অনেক, কিন্তু তোমার কাছে অতিশয় তুচ্ছ। কত শুনি ? সাত-আট হাজার । এ আমাকে দিতে হবে। সভয়ে কহিলাম, সে কি কথা ! লক্ষ্মী দানই করেন, তিনি হাতও পাতেন নাকি ? রাজলক্ষ্মী সহাস্তে কহিল, লক্ষ্মীর অপব্যয় সয় না। তিনি সন্ন্যাসী ফকিরকে বিশ্বাস করেন ন!—তারা অযোগ্য বলে। আনে৷ টাকা । কি করবে ? করব আমার অন্নবস্ত্রের সংস্থান । এখন থেকে এই হবে আমার বঁচিবার মূলধন । কিন্তু এটুকু মূলধনে চলবে কেন ? তোমার একপাল দাসী-চাকরের পনেরো দিনের মাইনে দিতেই যে কুলোবে না । এর ওপর আছে গুরু-পুরুত, আছে তেত্রিশ কোটি দেব-দেবতা, আছে বহু বিধবার ভরণ-পোষণ—তাদের উপায় হবে কি ? তাদের জন্য ভাবনা নেই, তাদের মুখ বন্ধ হবে না। আমার নিজের ভরণ-পোষণের কথাই ভাবচি বুঝলে ? বলিলাম, বুঝেচি ! এখন থেকে কোন একটা ছলনায় আপনাকে ভুলিয়ে রাখতে চাও—এই ত ? রাজলক্ষ্মী বলিল, না তা নয়। সে-সব টাকা রইল অন্য কাজের জন্তে, কিন্তু তোমার কাছে হাত পেতে যা নেব এখন থেকে সেই হবে আমার ভবিষ্যতের পুজি। কুলোয় খাব, না হয় উপোস করব। তা হলে তোমার অদৃষ্টে তাই আছে। কি আছে— উপোস ? এই বলিয়া সে হাসিয়া কহিল, তুমি ভাবচ সামান্য, কিন্তু সামান্তকেই কি করে বাড়িয়ে বড় করে তুলতে হয় সে বিদ্যে আমি জানি। একদিন বুঝবে আমার ধনের সম্বন্ধে তোমরা যা সন্দেহ কর তা সত্যি নয়। এ-কথা এতদিন বলোনি কেন ? বলিনি বিশ্বাস করবে না বলে। আবার টাকা তুমি ঘৃণায় ছোও না, কিন্তু তোমার বিতৃষ্ণায় আমার বুক ফেটে যায়। ব্যথিত হইয়া কহিলাম, হঠাৎ এসব কথা আজ কেন বলচ লক্ষ্মী ? রাজলক্ষ্মী আমার মুখের পানে ক্ষণকাল চাহিয়া থাকিয়া বলিল, এ-কথা তোমার ઉર્જ-૪૭