পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (চতুর্থ সম্ভার).djvu/১৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্রহ ঝরা-বকুলে সব ছেয়ে আছে—ঐখানে । রাজলক্ষ্মীর চোখ জলে ভরিয়া আসিল, জিজ্ঞাসা করিল, আর সেই পরিচিত লোকটি কি করবে তখন ? বলিলাম, সে জামি জানিনে। হয়ত অনেক টাকা খরচ করে মন্দির বানিয়ে छि बांग्व রাজলক্ষ্মী কহিল, না, হ’লে না । সে বকুলতলা ছেড়ে আর যাবে না । গাছের ডালে ডালে করবে পাখীরা কলরব, গাইবে গান, করবে লড়াই—কত ঝরিয়ে ফেলবে শুকনো পাতা, শুকনো ডাল, সে-সব মুক্ত করার কাজ থাকবে তার। সকালে নিকিয়ে মুছিয়ে দেবে ফুলের মালা গেথে, রাত্রে সবাই ঘুমোলে শোনাবে তাকে বৈষ্ণব কবিদের গান, তারপর সময় হলে ডেকে বলবে, কমললতাদিদি, আমাদের এক করে দিয়ো সমাধি, যেন ফাক না থাকে, যেন আলাদা বলে চেনা না যায় । আর এই নাও টাকা, দিয়ে মন্দির গড়িয়ে, ক’রে রাধাকৃষ্ণের মূৰ্ত্তি প্রতিষ্ঠ, কিন্তু লিখো না কোন নাম, রেখে না কোন চিহ্ন—কেউ না জানে কেই বা এরা, কোথা থেকেই বা এলো । বলিলাম, লক্ষ্মী, তোমার ছবিটি যে হ’লো আরও মধুর, আরও স্বন্দর। রাজলক্ষ্মী বলিল, এ ত কেবল কথা গেঁথে ছবি নয় গোসাই, এ যে সত্যি। তফাত যে ঐখানে ! আমি পারব, কিন্তু তুমি পারবে না। তোমার আঁকা কথার ছবি শুধু কথা হয়েই থাকবে । কি করে জানলে ? জানি। তোমার নিজের চেয়েও বেশী জানি। ঐ ত আমার পূজে, ঐ ত আমার ধ্যান । আহ্নিক শেষ করে কার পায়ে দিই জলাঞ্ছলি ? কার পায়ে দিই ফুল ? সে ত তোমারই । নীচে হইতে মহারাজের ডাক আসিল, মা, রতন নেই, চায়ের জল তৈরী হয়ে গেছে । যাই বাবা, বলিয়া সে চোখ মুছিয়া তখনি উঠিয়া গেল । খানিক পরে চায়ের বাটি লইয়া ফিরিয়া আসিয়া আমার কাছে রাখিয়া দিয়া বলিল, তুমি বই পড়তে এত ভালোবাসো, এখন থেকে তাই কেন করে না ? তাতে টাকা ত আসবে না ? কি হবে টাকায় ? টাকা ত আমাদের অনেক আছে। একটু থামিয়া বলিল, উপরের ঐ দক্ষিণের ঘরটা হবে তোমার পড়ার ঘর। আনন্দ ঠাকুরপে আনবে বই কিনে, আর আমি সাজিয়ে তুলব আমার মনের মত করে। ওর একপাশে থাকবে আমার শোবার ঘর, অন্যপাশে হবে আমার ঠাকুর ১R৮