পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (চতুর্থ সম্ভার).djvu/১৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

毫 শ্ৰীকান্ত আমি ইহার উত্তর দিলাম, বলিলাম, আমার হাত দেখে সে বললে, মস্ত কঁড়ি – জীবন-মরণের সমস্যা । দিদি, এসব আপনি বিশ্বাস করেন ? আমি বলিলাম, ই করেন, আলবৎ করেন । তোমার দিদি বলেন, ফঁাড়া বলে কি পৃথিবীতে কথা নেই ? কারও কখনো কি বিপদ ঘটে না ? আনন্দ হাসিয়া কহিল, ঘটতে পারে, কিন্তু হাত গুনে বলবে কি করে দিদি ? রাজলক্ষ্মী বলিল, তা জানিনে ভাই, শুধু আমার ভরসা আমার মত ভাগ্যবতী যে, তাকে কখনো ভগবান এত বড় দুঃখে ডোবাবেন না । আনন্দ স্তব্ধমুখে ক্ষণকাল তাহার মুখের পানে চাঙ্কিয়া অন্য কথা পাড়িল । ইতিমধ্যে বাড়ির লেখাপড়া, বিলি-ব্যবস্থার কাজ চলতে লাগিল, রাশীকৃত ইট-কাঠ, চুন-স্বরকি, দরজা-জানল আসিয়া পড়িল—পুরাতন গৃহটিকে রাজলক্ষ্মী নূতন করিয়া তুলিবার আয়োজন করিল। সেদিন বৈকালে আনন্দ কহিল, দাদা, চলুন একটু ঘুরে আসি গে। ইদানীং আমার বাহির হইবার প্রস্তাবেই রাজলক্ষ্মী অনিচ্ছা প্রকাশ করিতে থাকে, কহিল, ঘুরে আসতে আসতেই যে রাত হয়ে যাবে আনন্দ, ঠাণ্ডা লাগবে না ? আজ আমার নিজের শরীরটাও বেশ ভালো ছিল না, বলিলাম, ঠাণ্ড লাগার ভয় নেই নিশ্চয়ই, কিন্তু আজ উঠতেও তেমন ইচ্ছে হচ্চে না আনন্দ । আনন্দ বলিল, ওটা জড়তা । সন্ধ্যেটা ঘরে এসে থাকলে অনিচ্ছে আরে চেপে ধরবে—উঠে পড়ুন। রাজলক্ষ্মী ইহার সমাধান করিতে কহিল, তার চেয়ে একটা কাজ করিনে আনন্দ ? ক্ষিতীশ পরশু আমাকে একটি ভালো হারমোনিয়ম কিনে দিয়ে গেছে, এথনে সেটা দেখবার সময় পাইনি । আমি দুটো ঠাকুরদের নাম করি, তোমরা দু'জনে বসে শোনো —সন্ধ্যাটা কেটে যাবে। এই বলিয়া সে রতনকে ডাকিয়া বাক্সটা আনিতে কহিল। আনন্দ বিস্ময়ের কণ্ঠে প্রশ্ন করিল, ঠাকুরদের নাম মানে কি গান নাকি দিদি ? রাজলক্ষ্মী মাথা নাড়িয়া সায় দিল । দিদির কি সে বিদ্যেও আছে নকি ? সামান্য একটুখানি । তারপরে আমাকে দেখাইয়। কহিল, ছেলেবেলায় ওঁর কাছেই হাতেখড়ি । আনন্দ খুশী হইয়া বলিল, দাদাটি দেখচি বর্ণচোর। আম, বাইরে থেকে ধরবার জে নেই। \రి: