পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (চতুর্থ সম্ভার).djvu/১৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বামুনের মেয়ে না—ত কি আর খাই! কিন্তু এতট বেল পৰ্যন্ত বাড়ি-বাড়ি ঘুরে বেড়ালুম একটা রুগী যোগাড় করতে পারলুম না। পরাণের নামে আমি নিশ্চয় কেস করব তোকে বললুম সন্ধে । ক্ষোভে অভিমানে সন্ধ্যার চোখে জল আসিতে চাহিল । এই পিতাটিকে সংসারে সর্বপ্রকার আঘাত, উপদ্রব, লাঞ্ছন, উপহাস, পরিহাস হইতে বাচাইবার জন্য সে যেন অহরহ তাহার দশ হাত বাড়াইয়। আড়াল করিয়া রাখিত সজলকণ্ঠে কহিল, কেন বাবা তুমি পরের জন্যে রোদে রোদে ঘুরে বেড়াবে! এই বাড়িতেই যে কতজন তোমার ওষুধের জন্যে এসে ফিরে গেল । কথাটার মধ্যে সত্যের কিছু অপলাপ ছিল। পল্লীর গরীব-দুঃখীরা ঔষধ চাহিতে আসে বটে, কিন্তু সে সন্ধ্যার কাছে, তাহার পিতার কাছে ময় । বাবার কাছেই সে ছোট-খাটো রোগের চিকিৎসা করিতে শিখিয়াছিল এবং তাহার দেওয়া ঔষধ প্রায় নিষ্ফলও হইত না । কিন্তু গুরুটিকে রোগীরা যমের মত ভয় করিত। তাই তাহারা সতর্ক হইয়া খোঁজখবর লইয়া এমন সময়েই বাড়ি ঢুকিত, যেন হঠাৎ মুখুয্যেমশায়ের হাতের মধ্যে গিয়া না পড়িতে হয় । সন্ধ্য ইহা জনিত, কিন্তু বাবার জন্য মিথ্য! বলিতে তাহার বাধিত না । কিন্তু পিতা একেবারে ব্যতিব্যস্ত হইয়া উঠিলেন—ফিরে গেল ? কে কে ? করা কারা ? কতক্ষণ গেল ? কোন পথে গেল ? নাম-ধাম জেনে নিয়েচিস্ত ! সন্ধ্যা মনে মনে অত্যন্ত লজ্জা পাইয়া কহিল, নাম-ধামে আমাদের কি দরকার বাবা, তারা আপনিই আবার আসবে অখন । অঃ, তোদের জালায় আর পারিনে বাপু । নামটা জিজ্ঞেস করতে কি হয়েছিল ? এখুনি ত একবার ঘুরে আসতে পারতুম ! দেরিতে কঠিন দাড়তে পারে—কিছুই বলা যায় ন—এখন একটি ফোটায় যে সারিয়ে দিতুম | - সন্ধ্যা নীরবে তেল মাখাইতে লাগিল, কিছুই বলিল না । পিতা পুনরায় প্রশ্ন করিলেন, কখন আসবে বলে গেল ? বিকেলবেলায় হয়ত— হয়ত দেখ দিকি কিরকম অন্যায়টাই হয়ে গেল ! ধৰ্ব, যদি কোনগতিকে নাই আসতে পারে ? ওরে—ও সন্ধ্যে, বিপনের কাছে গিয়ে পড়ল না ত? পরানে হারামজাদ ত ঐ খোজেই থাকে, সে ত এর মধ্যে খবর পায়নি ? না বাপু, আর পারিনে আমি । বাড়িতে কি ছাই দুটি মুড়ি-মুড়কিও ছিল না ? দুটো দুটো দিয়ে কি ঘণ্টাখানেক বসিয়ে রাখতে পারতিস্নে ? যা না বলে দেব, যেটি না দেখব—কে ? কে ? কে উকি মারচ aহ ? চলে এস না ? আরে রামময় যে ? খোড়াচ্চ কেন বল দিকি ? উাহার সাদর আহ্বান ও কলকণ্ঠে একজন চাষীগোছের মধ্যবয়সী লোক উঠানে yo"