পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (চতুর্থ সম্ভার).djvu/১৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ধৰ্ম্মপথে থেকে ভিক্ষে করি সে ভালো, কিন্তু অধৰ্ম্মের পয়সা যেন কখনো না ছুতে হয় । কেবল তার পদেই চিরদিন মতি স্থির রেখেচি বলেই আজ পচখানা গ্রামের সমাজপতি ! আজি মুখের একটা কথায় বামুনকে শৃদ্ধ ত্ব, শূদ্ধ ত্বকে বামুনের দলে তুলে দিতে পারি। মধুস্থদন ! তুমিই ভরসা ! সেবার ভারী অমুখে জয়গোপাল ডাক্তার বললে, সোডার জল আপনাকে খেতেই হবে। আমি বললুম, ডাক্তার, জন্মালেই মরতে হবে সেটা কিছু বেশী কথা নয়, কিন্তু গোলোক চাটুয্যেকে ও-কথা যেন আর দ্বিতীয়বার না কানে শুনতে হয় । কেনারামের পুত্র হররাম চাটুয্যের পৌত্র-যার একবিন্দু পাদোদকের আশায় স্বয়ং ভাড়াবহাটীর রাজাকেও পালকিবেহারা পাঠিয়ে দিতে হ’ত ! চোঙদার দ্বিতীয়বার প্রণাম করিয়া উঠিয়া দাড়াইয়া কহিল, ও-কথা কে আর অস্বীকার করবে বলুন—ও ত পৃথিবীমৃদ্ধ লোক জানে । গোলোক প্রত্যুত্তরে শুধু কেবল একটা নিশ্বাস ত্যাগ করিয়া কহিলেন, মধুসূদন । তুমিই ভরসা ! চোঙদার প্রস্থানের উপক্রম করিতে তিনি ডাকিয়া কঠিলেন, আর দেখ, হরেনের কাছ থেকে এলে রেলের রসিদটা একবার দেখিয়ে যেয়ো । চোঙদার ঘাড় নাড়িয়া কহিল, যে আজ্ঞে । গোলোক কহিলেন, তা হলে আটশ আর পাচশ হ’লো ! বাকী রইল সতেরশ– মাস-তিনেক সময় অেিছ—হয়ে যাবে, কি বল হে ? চোঙদার বলিলেন, আজ্ঞে, হয়ে যাবে বইকি । গোলোক কহিলেন, তাই তোমাকে তখনই বলেছিলুম চোঙদার, একেবারে ওটা পুরোপুরি হাজারপাচেকের কনটাক্টোই করে ফেল। তখন সাহস করলে না— চোঙদার কহিলেন, অজ্ঞে, অতগুলো ছাগল-ভেড়া যদি যোগাড় না হয়ে ওঠে— গোলক প্রতিবাদ করিলেন না, কহিলেন, তাই ভাল, তাই ভাল। ধৰ্ম্মপথে একের জায়গায় আধ, আধের জায়গায় সিকি হয় সেও ঢের, কিন্তু অধৰ্ম্মের পথে মোহরও কিছু নয়। বুঝলে না চোঙদার ? মধুসূদন ! তুমিই ভরসা ! চোঞ্জার আর কিছু না বলিয়া প্রস্থান করিলে ভগবদ্ভজ গৃহস্থ সন্ন্যাসী চাটুয্যে মহাশয় দগ্ধ ছকাটা তুলিয়া লইয়া চিস্তিতমুখে তামাক টানিতে লাগিলেন, বিষয়কৰ্ম্ম বোধ করি বা বিষের মতই বোধ হইতে লাগিল, কিন্তু এমনি সময়ে অন্দরের দিকের কব৪৯ ইষৎ উদঘাটিত করিয়া দাসী মুখ বাড়াইয়া কহিল, মাসীমা একবার ভেতরে ডাকচেন । গোলোক চকিত হইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, কেন বল ত সন্ধু ? দাদী কহিল, একটুখানি জলখাবার নিয়ে বসে আছেন মসিীমা । ›ፄግ ઇર્ષ- ૨૭ í