পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (চতুর্থ সম্ভার).djvu/১৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বামুনের মেয়ে মেয়ের বিয়ে দিতে দেরি করিসনে। যেখানে হোক দিয়ে ফেলে পাপ চুকিয়ে দে, চুকিয়ে দে। জগদ্ধাত্রী কাদিয়া ফেলিয়া বলিলেন, দাও না মামা একটা দেখেশুনে । আর যে আমি ভাবতে পারিনে ! গোলোক মাথা নাড়িতে নাড়িতে বলিলেন, আচ্ছা, দেখি । কিন্তু কি জানিস ম, এক মেয়ে, দূরে বিয়ে দিয়ে কিছুতে থাকতে পারবিনে, কেঁদে-কেটে মরে যাবি । আমাদের অভাবের ঘরে পাত্রের বয়স দেখতে গেলে চলে না । তবে কাছাকাছি হয়, দু’বেলা চোখের দেখাটা দেখতে পাস্ত তার চেয়ে মুখ আর নেই । জগদ্ধাত্রী চোখ মুছিয়া করুণকণ্ঠে কহিলেন, কোথায় পাব মামা এত স্ববিধে ? তবে ঘর-জামাই— গোলোক কথাটা শেষ করিতেও দিলেন না, বলিলেন, ছিছি, অমন কথা মুখেও আনিসনে জগে, ঘর-জামাইয়ের কাল আর নেই, তাতে বড় নিন্দে । আর যদিও বা একটা গোয়ার-গোবিন্দ ধরে আনিস, গাজী-গুলি আর আর মাতলামি করেই তোর যথাসৰ্ব্বস্ব উড়িয়ে দেবে। বলি, নিজের কথাটাই একটু ভেবে দেখ, না । ইহার নিহিত ইঙ্গিত অনুভব করিয়া জগদ্ধাত্রী চোখের নিমেষে উত্তেজিত হইয়া উঠিলেন, বলিলেন, চিরকালটাই দেখছি মামা, চিরকালটাই জলে-পুড়ে মরচি । গোলোক মৃদুহস্ত করিয়া বলিলেন, তবে তাই বল। বিনা কাজকৰ্ম্মে বসে বসে খেলেই এমনি হবে। এ কি আর তোর মত বুদ্ধিমতী বুঝতে পারে না ? জগদ্ধাত্রী আপ্যায়িত হইয়া কহিলেন, বুঝি বই কি, ভেতরে ভেতরে সব বুঝি ; কিন্তু আমি মেয়েমানুষ, কোনদিকে যে কুলকিনারা দেখতে পাইনে । গেলোক আশ্বাস দিয়া কহিলেন, পাবি, পাবি । তাড়াতাড়ি পি– দেখি না একটু ভেবে-চিন্তে । কিন্তু আজ যাই, সন্ধ্যা হয়ে গেছে। জগদ্ধাত্রী মিনতি করিয়া বলিলেন, মামা, দাড়িয়ে দাড়িয়েই রইলে, একট বমবে না ? গোলোক বলিলেন, না মা, সন্ধ্যে-আহিকের সময় উত্তীর্ণ হয়ে যাচ্চে-আজ আর বিলম্ব করব না । এই বলিয়া তিনি ধীরে ধীরে বহির হইয়া গেলেন । জগদ্ধাত্রী র্তাহাকে আগাইয়। দিতে সদর দরজার বাহির পর্য্যস্ত সঙ্গে সঙ্গে অগ্রসর হইয়া গেলেন । »w& aर्थ-२8