পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (চতুর্থ সম্ভার).djvu/১৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ aয় চিস্থিত-মুখে কিছুক্ষণ দাড়াইয়া থাকিয়া বলিলেন, লোকজনের কষ্ট হচ্চে, আচ্ছা নাও গে যাও–কিন্তু গিন্নী যেন শুনতে না পায় । উঃ—বড় বেলা হয়ে গেল রকে বাগদীর পরিবারটা রাত্রে কেমন ছিল কে জানে ! ব্রায়োনিয়ার অ্যাকৃশনটা – নড়লেচড়লে ব্যথা—হতেই হবে । আচ্ছা চললুম। বলিয়া প্রিয় দ্রুতবেগে অদৃশ্য হইয়া গেলেন । বুড়া যষ্ঠীচরণ একটু হাসিল ; কিন্তু ত্ৰৈলোক্য কহিল, ক্ষ্যাপাটে লোকে বলে বটে, কিন্তু খুড়ো, পাগলtঠাকুর ছাড়া গরীব-দুঃখীর দরদও কেউ বোঝে না । মন যেন গঙ্গাজলের মত সদা । এই বলিয়। সে যেদিকে পাগলীঠাকুর অন্তহিত হইয়াছিল সেই দিকে মুখ করিয়া দুই হাত জোড় করিয়া একটা নমস্কার করিল। ষষ্ঠীচরণ বলিল, হুকুম হয়ে গেল, আর দেরি নয় ত্ৰৈলোক্য, কাজটা শেষ করে ফেলতে পারলে হয় । ত্ৰৈলোক্য ঘtড নড়িয়া কহিল, তাই চল খুড়ে । وا সন্ধ্যর অন্ধকার ধীরে ধীরে গাঢ় হইয়। আসিতেছিল, কিন্তু তখনও আলো জ্বালা হয় নাই। অরুণ তাহার পড়িবার ধবের মধ্যে টেবিলের উপর দুই পা তুলিয়া দিয়! কড়িকাঠের প্রতি দুষ্ট নিবদ্ধ করিয়া স্থির হইয়া বসিয়ছিল । তাহার ক্রেড়ের উপর বই খেলা, কিন্তু একটু মনোযোগ করিলেই দেখা যাইত যে, এ কেবল সন্ধার অজুহাতেই পড়া বন্ধ হয় নাই, বরঞ্চ আলো যখন যথেষ্ট ছিল, তখনও ঐ বই ওখানে অমনি করিয়াই পড়িয়ছিল । বস্তুত: সেইদিন হইতে সে কাজেও যায় নাই, বাড়ির বাহির পর্য্যন্ত হয় নাই ! এই কয়টা দিন তাহার কেবল একটা কথাই বার বার মনে পড়িয়ছে যে, একজনের কাছে সে একেবারে অস্পৃশ্য হইরা গেছে । ঘূণা এবং অশুচিত। এতদূরে গিয়াছে যে, তাহাকে ছুইয়া ফেলিলেও একজনের মুখের পান ফেলিয়। দিবার প্রয়োজন হয় । সহসা তাহার চিন্তা বাধা পাইল । দ্বারের কাছে একটা শব্দ শুনিয়া সে চোখ নামাইয়৷ ঠাহর করিয়া দেখিয় জিজ্ঞাসা করিল, কে ওখানে ? আমি সন্ধ্যা,—বলিয়া সাড় দিয়া সন্ধ্য দরজা খুলিয়া চৌকাঠ ধরিয়া দাড়াইল । অরুণ ব্যস্ত হইয়া পা নমাইয়া উঠিয়া দাড়াইল এবং একান্ত বিস্ময়ের কণ্ঠে প্রশ্ন করিল, তুমি এখানে ? এমন সময় যে ? ঘরে এসে বসে। সন্ধ্যা কহিল, আমার বসবার সময় নেই । আমি পুকুরে গা ধুতে এসে তোমার এখানে লুকিয়ে এসেচি। আমার একটা মান রাখবে অরুণদা ? >brb"