পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (চতুর্থ সম্ভার).djvu/২৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

निक्लडि তাহা তিনি কল্পনাও করিতে পারিতেন না। দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া বলিলেন, বাছা রে! বাড়িতে কেউ কি অতুলের সঙ্গে কথা কয় না মেজবোঁ ? নয়নতারাও একটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া বলিল, জিজ্ঞেস করেই দেখ না দিদি। হরিচরণকে সেইখানে ডাকাইয়া আনিয়া সিদ্ধেশ্বরী প্রশ্ন করিলেন । হরিচরণ তেজের সহিত তৎক্ষণাৎ জবাব দিল, ও ছোটলোকটার সঙ্গে কে কথা কইবে, মা ? বড়দাকে যা মুখে আসে তাই বলে, ছোটখুড়ীমাকে গালাগালি দেয়। সিদ্ধেশ্বরী হঠাৎ প্রত্যুত্তর করিতে পারিলেন না। একটু পরে কহিলেন, যা হয়ে গেছে তার আর উপায় কি হরি ; যাও, ডেকে কথা কও গে । হরিচরণ মাথা নাড়িয়া বলিল, ওর কথা বলবার ভাবনা নেই মা ! পাড়ার আস্তাবলে অনেক গাড়োয়ান আছে সেইখানে যাক, ঢের বন্ধুবান্ধব জুটে যাবে। নয়নতারা জলিয়া উঠিয়া বলিল, তোর মুখও ত নেহাৎ কম নয় হরি ; তুই এমন কথা আমাদের বলিস্ ! আচ্ছা, সেই ভাল! আমরা গাড়োয়ানদের সঙ্গেই মেলামেশা করতে যাব । ওঠে। দিদি, জিনিসপত্রগুলো চাকসুট বেঁধে-ছেদে নিক । হরিচরণ মায়ের দিকে চাহিয়া বলিল, অতুল সকলের স্বমুখে দাড়িয়ে কান মলবে, নাকখত দেবে, তবে আমরা কথা ক’ব । তা নইলে ছোটখুড়ীমা—ন, মা, সে আমরা কেউ পারবো না । বলিয়াই আর কোন তর্কবিতর্কের অপেক্ষা না করিয়া সে ঘর ছাড়িয়া চলিয়া গেল । সিদ্ধেশ্বরী বিমর্ষ হইয়া বসিয়৷ রছিলেন । মেজবেী মৃদুকণ্ঠে কহিল, ছোটবউ একবার যদি ছেলেদের ডেকে বলে দেয়, তা হলে সমস্ত গোলই মিটে যায় ! সিদ্ধেশ্বরী ধীরে ধীরে মাথা নাড়িয়া বলিলেন, তা যায় । মেজবোঁ কহিল, তবেই দেখ দিদি ৷ এইসব ছেলের বড় হয়ে তোমাকে মানবে, না ভালবাসবে ? বলা যায় না ভবিষ্যতের কথা—নিজের ছেলেমেয়েরা তোমার পর হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু আমার অতুল-টতুলকে তোমরা যে যাই বল, তাদের মা-অস্ত প্ৰাণ । আমি বললে সাধ্য কি তার এমন করে ঘাড় নেড়ে তেজ করে বেরিয়ে যায়। এতটা বাড়াবাড়ি কিন্তু ভাল নয় দিদি। লিঙ্কেশ্বরী এত কথায় বোধ করি মন দিতে পারেন নাই ; নিরীহভাবে জবাব দিলেন, তা বটে । এ-বাড়ির মণি থেকে পটল পৰ্য্যস্ত সবাই ঐ শৈলর বশে । সে যা বলবে যা করবে, তাই হবে-কেউ আমাকে মানেও না। এটা কি ভাল ? সিদ্ধেশ্বরী মুখ তুলিয়া বলিলেন, কোনটা? ওরে ও নীলা, তোর খুড়ীমাকে একবার ডেকে দে ত মী । 없