পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (চতুর্থ সম্ভার).djvu/২৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ চুকিয়া একেবারেই কাজের কথা পাড়িলেন। বলিলেন, তোমার কাজকৰ্ম্ম করে লাভটা কি, আমাকে বলতে পার? কেবল শুদ্ধারের পাল খাওয়াবার জন্যেই কি দিবারাত্র খেটে মরবে ? গিীশের খাওয়ার কথাটাই বোধ করি শুধু কানে গিয়াছিল। মুখ না তুলিয়াই কহিলেন, না, আর দেরি নেই। এইটুকু দেখে নিয়েই চল খেতে যাচ্চি। সিদ্ধেশ্বরী বিরক্ত হইয়া বলিলেন, খাওয়ার কথা তোমাকে কে বলচে ! আমি বলচি, ছোটবেীরা যে বেশ গুছিয়ে নিয়ে এবার বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাচ্চেন। এতদিন যে তাদের এত করলে, সব মিছে হয়ে গেল, সে খবর শুনেচ কি ? গিরীশ কতকটা সচেতন হইয়া বলিলেন, হু, শুনেচি বইকি ! ছোটবোঁমাকে বেশ করে গুছিয়ে নিতে বল ! সঙ্গে কে কে গেল-মণিকে—মোকদ্দমার কাগজাদির মধ্যে অসমাপ্ত কথাটা এইভাবেই থামিয়া গেল । সিদ্ধেশ্বরী ক্রোধে চেঁচাইয়া উঠিলেন, আমার একটা কথাও কি তোমার কানে তুলভে নেই ? আমি কি বলচি, আর তুমি কি জবাব দিচ্চ ! ছোটবেীরা যে বাড়ি থেকে চলে যাচ্ছে । ধমক খাইয়া গিরীশ চমকাইয়া উঠিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, কোথায় যাচ্চেন ? সিদ্ধেশ্বরী তেমনি উচ্চকণ্ঠে জবাব দিলেন, কোথায় যাচ্ছে তার আমি কি জানি ? গিরীশ কহিলেন, ঠিকানাটা লিখে নাও না ? সিদ্ধেশ্বরী ক্ষোভে অভিমানে ক্ষিপ্তপ্রায় হইয়া কপালে করাঘাত করিয়া বলিতে লাগিলেন, পোড়া কপাল! আমি নিতে যাব তাদের ঠিকানা লিখে! আমার এমন পোড়া অদৃষ্ট না হবে ত তোমার হাতে পড়ব কেন ? বাপ-মা আমাকে হাত-পা বেঁধে গঙ্গার জলে ভাসিয়ে দিলে না কেন ? বলিতে বলিতে তিনি কাদিয়া ফেলিলেন । বাপ-মা যে র্তাহাকে অপাত্রে অপর্ণ করিয়াছিলেন, আজ তেত্রিশ বৎসরের পর সেই দুর্ঘটনা আবিষ্কার করিয়া তাহার মনস্তাপের অবধি রহিল না। কহিলেন, আজ যদি তুমি ছ'চক্ষু বোজে, আমি না হয় কারো বাড়ি দাসীবৃত্তি করে খাবে, সে জামাকে করতেই হবে তা বেশ জানি-আমার মণি-হরি যে কোথায় দাড়াবে, তার—, বলিয়া সিদ্ধেশ্বরীর ক্ৰন্দন এতক্ষণে মুক্তিলাভ করিয়া একেবারে দুই চক্ষু তাসাইয়া দিল । জরুরী মোকদ্দমার দলিল-দস্তাবেজ গিরীশের মগজ হইতে লুপ্ত হইয়া গেল। স্ত্রীর আকস্মিক ও অত্যুঞ্জ ক্ৰন্দনে উচ্চত্রান্ত হইয়া তিনি ক্রুদ্ধ, গম্ভীরকণ্ঠে ডাক দিলেন, হয়ে ? হরি পাশের ঘরে পড়িতেছিল। শশব্যস্ত হইয়া চুটিয়া আসিল । গিরীশ প্রচও একটা ধমক দিয়া বলিলেন, ফের যদি তুই ঝগড়া করবি ত ঘোড়ার ఫి ఆసి