পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (চতুর্থ সম্ভার).djvu/২৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নিষ্কৃতি করতে পারব না। পরকালে আমার হঃে ত আর তুমি জবাব দিতে যাবে না! তুমি না লেখে, আমি মণিকে পাঠিয়ে নগেনবাবুর কাছ থেকে লিখিয়ে আনি গে । বলিয়া তিনি উঠিয়া গেলেন । পরদিন সকালবেলায় কি একটা কাজে বাজার-খরচের হিসাব লইয়। সিদ্ধেশ্বরী বাড়ির সরকার গণেশ চক্ৰবৰ্ত্তীর সঙ্গে বচসা করিতেছিলেন। সে বেচারা নানাপ্রকারে বুঝাইবার চেষ্টা করিতেছিল যে, বারে গও টাকার উপর আরও দু’টাকা খরচ হওয়াতেই পঞ্চাশ টাকা ব্যয় হইয়া গিয়াছে । গৃহিণী এ কৰ্ম্মে নূতন ব্রতী। তাহর নূতন ধারণা— তাহাকে নিৰ্ব্বোধ পাইয়া সবাই টাকা চুরি করে। অতএব চক্রবর্তীও যে চুরি কবিয়াছে তাহাতে সন্দেহ নাই। তিনি তর্ক করিতেছিলেন, পঞ্চাশ টাকা যে এক আজলী টীকা গণেশ' আমি লেখাপড়া জানিনে বলেই কি তুমি বুঝিয়ে দেবে যে, বারো গণ্ডার ওপর মোটে দুটি টাকা বেণী খরচ হয়েচে বলে এই পঞ্চাশটে টাকা সব খরচ হয়ে গেছে—আর কিছু নেই ? আমি কি এতই বোকা । গণেশ ব্যাকুল হইয়। বলিল, মা, দিদিকে ডেকে না হয়— নীলাকে ডেকে হিসেব বুঝতে হবে ? সে আমার চেয়ে বেশি বুঝবে ? না গণেশ, ওসব ভাল কথা নয়। শৈল নেই বলেই ষে তোমার যা ইচ্ছে তাই করে হিসেব দেবে সে হবে না বলচি। না সে যাবে, না আমাকে এত ঝঞ্চাট পোয়াতে হবে । পোড়ারমুখীকে দশ বছরের মেয়ে বেী করে ঘরে আনলুম, বুকে করে মানুষ করে এত বড় করলুম, এখন তেজ করে বাড়ির দু’-দুটো ছেলে নিয়ে বেরিয়ে গেল । তা যাক। আমিও খবর রাখচি। কানাই-পটলের কোনদিন এতটুকু অমুখ শুনতে পেলে দেখব, কেমন করে সে ছেলে রাখে ? তা এখন যাও— দুপুরবেলা মনে করে বলে যেয়ে, এতগুলো টাকা কোথায় কি করলে। বলিয়া গণেশকে বিদায় দিলেন । সে বেচারা হতবুদ্ধি হইয়া বাইরে চলিয়া গেল। : মেজবোঁ আসিয়া কহিল, দিদি, বলতে পারিনে কিন্তু আমিও সংসার চালিয়েচি, টাকাকড়ি হিসাব-পত্র সব রেখেচি। ছোটবোঁ নেই বলে যে এত কথাট তুমি সহ করবে, আর আমি বসে বসে দেখব, ভাল নয়। আমার কাছে কারো চালাকি করে হিসেবে গোল করবার জো নেই। সিদ্ধেশ্বরী কহিলেন, সে ত ভাল কথা মেজবোঁ । আমার এই রোগা শরীরে এত হাঙ্গামা ভাল লাগে ! শৈল ছিল—যেখানকার যত টাকা তার হিসেব করা, খরচ করা, ব্যাঙ্কে পাঠানো সমস্তই তার কাজ। এসব কি আর আমাকে ल्नि श्ख्न ?