পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (চতুর্থ সম্ভার).djvu/২৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ বিজয়া। আপনার নিষেধ তিনি শুনবেন মনে করেন ? বিলাস । অন্ততঃ সেই চেষ্টাই আমাকে করতে হবে। বিজয়া । (ক্ষণকাল মৌন থাকিয়া) বেশ ! আপনি যা পারেন করবেন, কিন্তু অপরের ধৰ্ম্মে-কৰ্ম্মে আমি বাধা দিতে পারব না । বিলাস । আপনার বাবা কিন্তু এ-কথা বলতে সাহস পেতেন না। বিজয়া। ( ঈষৎ রুক্ষম্বরে ) বাবার কথা আপনার চেয়ে আমি ঢের বেশী জানি বিলাসবাৰু। কিন্তু সে নিয়ে তর্ক করে ফল নেই—আমার স্বানের বেলা হ’লো, আমি উঠলুম। (গমনোস্থ্যত ) বিলাস । মেয়েমানুষ জাতটা এমনই নেমকহারাম । বিজয়া পা বাড়াইয়াছিল । বিদ্যুৎবেগে ফিরিয়া দাড়াইয়া পলকমাত্র বিলাসের প্রতি দৃষ্টিপাত করিয়া নিঃশব্দে ঘর হইতে চলিয়া গেল। এমনি সময় বৃদ্ধ রাসবিহারী ধীরে ধীরে প্রবেশ করিতেই পুত্র বিলাসবিহারী লাফাইয়া উঠিল ] বিলাস। বাবা, শুনেছ এইমাত্র কি ব্যাপার ঘটলো? পূর্ণ গাঙ্গুলী এবারও ঢাক ঢোল কঁাসি বাজিয়ে দুর্গাপূজা করবে, বারণ করা চলবে না। এইমাত্র তার কে একজন ভাগনে এসেছিল প্রতিবাদ করতে, বিজয়া তাকে হুকুম দিলেন পূজো হোক । রাসবিহারী । তা তুমি অগ্নিশৰ্ম্ম হয়ে উঠলে কেন ? বিলাস । হব না ? তোমার হুকুমের বিরুদ্ধে হুকুম দেবে বিজয়া ? এবং আমার আপত্তি করা সত্বেও ? রাস। কিন্তু এই নিয়ে তার সঙ্গে রাগারগি করলে নাকি ? বিলাস। কিন্তু উপায় কি ? আত্মসম্মান বজায় রাখতে— রাস। দেখ বাপু, তোমার এই আত্মসম্মানবোধটা দিন কতক খাটো কর, নইলে আমি তো আর পেরে উঠিনে । বিয়েটা হয়ে যাক, বিষয়টা হাতে আম্বক, তখন ইচ্ছে মত আত্মসম্মান বাড়িয়ে দিও, আমি নিষেধ করব না। [ বিজয়ার প্রবেশ ] , ব্লাস । এই যে মা বিজয়া । বিজয়া। আপনাকে আসতে দেখে আমি ফিরে এলুম কাকাবাৰু। শুনে হয়ত আপনি রাগ করবেন, কিন্তু মোট তিনদিন বই তো নয়, হোক গে গোলমাল—জামি অনায়াসে সইতে পারব; কিন্তু গাঙ্গুলীমশায়ের দুর্গাপূজায় বাধা দিয়ে কাজ নেই। আমি । অনুমতি দিয়েছি । রাস । সেই কথাই বিলাস আমাকে বোঝাচ্ছিল। বুড়োমানুষ, শুনে হঠাৎ চঞ্চল হয়ে উঠেছিলুম যে ভবিষ্যতে এরকম পুনৰ্ব্বার ঘটলে তো চলবে না। তখন জাত্মসম্মান বজায় প্রাখতে তোমার বিষয় থেকে নিজেকে তফাৎ করতেই হবে।” কিন্তু aー●