পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (চতুর্থ সম্ভার).djvu/৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্রীকান্ত ঘরে এনে বসাও রতন, আমি মুখ-হাত ধুয়ে আসছি, এই বলিয়া নীচে মানের ঘরে চলিয়া গেলাম । ঘণ্টাখানেক পরে ফিরিয়া আসিতে ঠাকুর্দাই আমাকে সমাদরে অভ্যর্থনা করিলেন, যেন জামিই অতিথি, এসে দাদা, এসো। শরীরটা বেশ ভালো ত ? আমি প্রণাম করিলাম। ঠাকুর্দ স্থাকিলেন, পুটু গেলি কোথায় ? পুটু জানালায় দাড়াইয়া রাস্তা দেখিতেছিল, কাছে আলিয়। আমাকে নমস্কার করিল। ঠাকুর্দ কহিলেন, ওর পিসীমা বিয়ের আগে ওকে একবার দেখতে চায়। পিসেমশাই হাকিম–পাচশো টাকা মাইনে। ডায়মণ্ডহারবারে বদলি হয়ে এসেচে—ঘর-সংসার ফেলে পিসীর বার হবার জো নেই, তাই সঙ্গে নিয়ে এলুম, বললুম, পরের হাতে তুলে দেবার আগে ওকে একবার দেখিয়ে আনি গে। ওর দিদিমা আশীৰ্ব্বাদ করে বললে, পুটি, এমনি অদৃষ্ট যেন তোরও হয়। আমি কিছু বলিবার পূৰ্ব্বে নিজেই বলিলেন, আমি কিন্তু সহজে ছাড়চিনে ভায়া। হাকিমই হোন, আর যেই হোন, আত্মীয় ত -দাড়িয়ে থেকে কাজটি সমাধা করে দিতে হবে-তবে তার ছুটি । জানোই তো দাদা, শুভকৰ্ম্মে বহু বিঘ্ন-শাস্ত্রে কি বলে— শ্ৰেয়াংসি বহু বিপ্লানি, আমন একটা লোক দাড়িয়ে থাকলে কারুর টু শব্দ করবার ভরসা হবে না। আমাদের পাড়াগায়ের লোককে ত বিশ্বাস নেই-ওরা সব পারে। কিন্তু হাকিম কিনা, ওদের রাশই আলাদা । পুঁটুর পিসেমশাই হাকিম । খবরটা অবাস্তর নয়—তাৎপৰ্য্য আছে। নতুন ছকা কিনিয়া আনিয়া রতন সযত্নে তামাক সাজিয়া দিয়া গেল, ঠাকুর্দ ক্ষণকাল ঠাহর করিয়া দেখিয়া বলিলেন, লোকটিকে কোথায় যেন দেখেছি বলে মনে হচ্চে না ? রতন তৎক্ষণাৎ কহিল, আজ্ঞে হ্যা, দেখেচেন বইকি। দেশের বাড়িতে বাবুর অমুখের সময় । ওt—তাই ত বলি । চেনা মুখ । আজ্ঞে ই । বলিয়া রতন চলিয়া গেল । ঠাকুর্দার মুখ ভয়ঙ্কর গম্ভীর হইয়া উঠিল। তিনি অত্যন্ত ধূৰ্ত্ত লোক, বোধ হয় সমস্ত কথাই তাহার স্মরণ হইল। নীরবে তামাক টানিতে টানিতে বলিলেন, বেরুবার সময়ে দিনটা দেখিয়ে এসেছিলাম, বেশ ভালো দিন, আমার ইচ্ছে আশীৰ্ব্বাদের কাজটা অমনি সেরে যাই। নতুনবাজারে সমস্ত কিনতে পাওয়া যায়, כאא