পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (চতুর্থ সম্ভার).djvu/৩৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ নরেন। পরে কিছু বেশী দিতে পারে। এখন চারশো টাকা মাত্র দেয় । রাস r (বিবর্ণমুখে চোখ কপালে তুলিয়া) চারশো! আহ বেশ-বেশ ! শুনে বড় স্বধী হলুম। নরেন । সেই পরেশ ছেলেটি কেমন আছে বলতে পায়েন ? রাস । তাকে একটু আগেই তাদের গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে ! নরেন। গ্রামটা কি দূরে ? স্বাস । তা জানিনে বাবা । নরেন । ( ক্ষণকাল স্তন্ধভাবে থাকিয়া ) তা হলে আর উপায় কি । সে-কথা যাক, কিন্তু আমার হয়ে বিলাসবাবুকে আপনি একটা কথা জানাবেন । বলবেন— প্রবল জয়ে মানুষের আবেগ নিতান্ত সামান্ত কারণে উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠতে পারে। বিজয়ার সম্বন্ধে ডাক্তারের মুখের এই কথাটা তিনি যেন অবিশ্বাস না করেন । রাস। অবিশ্বাস করবে কি নরেন, এ কি আমরা জানিনে ? বাপ হয়ে এ-কথা বলতে আমার মুখে বাধে, কিন্তু তুমি আপনার জন বলেই বলি, দু'জনের কি গভীর ভালবাসার চিহ্নই যে মাঝে মাঝে আমার চোখে পড়ে সে প্রকাশ করবার আমার ভাষা নেই। মনে হয় ভগবান যেন সঙ্কল্প করেই পরম্পরের জন্যে এদের স্বজন করে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। তাকে প্রণাম করি, আর ভাবি সার্থক এদের মিলন, সার্থক এদের জীবন । নরেন। এই বৈশাখেই বুঝি এদের বিবাহ হবে ? রাস । হা নরেন । সেদিন কিন্তু তোমাকে আপতে হবে, উপস্থিত থেকে নব-দম্পতিকে আশীৰ্ব্বাদ করতে হবে । তাড়াতাড়ি করার আমার ইচ্ছে ছিল না, কিন্তু সকলেই পুন: পুল: বলছেন অস্তরে আত্মা যাদের এমন করে এক হয়েছে বাইরে তাদের পৃথক্ করে রাখ। অপরাধ। আমি বললুম, তাই হোক। তোমাদের সকলের ইচ্ছেই আমার ভগবানের ইচ্ছে। এই বৈশাখেই এক হয়ে এরা সংসায়সমুদ্রে জীবন-তরণী ভাসাক। জগদীশ্বর! আমার দিন শেষ হয়েছে, কিন্তু তুমি এদের দেখো—তোমার চরণেই এঙ্গের সমর্পণ করলুম। ( যুক্তকর ললাটে স্পর্শ করিয়া হেঁট হইয়। তিনি প্রণাম করিলেন । ) কিন্তু তোমার যে রাত হয়ে যাচ্ছে বাবা, জাজই কি কলকাতায় ফিরে না গেলেই নয় ? নরেন । না, আমাকে যেতেই হবে । সাড়ে আটটার ট্রেনেই যাব । রাস। জিদ করতে পারিনে নরেন, নতুন চাকরি, কামাই হওয়া ভাল নয় – মনিব রাগ করতে পারে। আজকের দিনটাও তো তোমার বৃথায় নষ্ট হ’লো । কিন্তু কিজগু আজ এসেছিলে বীৰ, জিজ্ঞেস করতে পারি কি ? নরেন। নিট নষ্ট হ’লে সত্যি, কিন্তু সকালে এসেছিলুম এই আশা করে যদি wo