পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (চতুর্থ সম্ভার).djvu/৩৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ জামাকে বলছেন, আমি না করলে আমার পিসীমার ছেলেদের দাবী করতে বলবেন ভয় দেখাচ্ছেন, কিন্তু তার আদেশমত দাবী আমার কোথায় পৰ্য্যন্ত পৌছতে পারে জানেন ? শুধু কেবল ওই বাড়িটা আর কয়েক বিধে জমি নয়-তার ঢের ঢের বেশী । বিজয়া । বাবা আর কি আপনাকে দিয়েছেন ? নরেন। তার সে চিঠিও আমার কাছে আছে। তাতে ধৌতুক শুধু ঐটুকু দিয়েই আমাকে তিনি বিদায় করেননি। যেখানে যা-কিছু দেখছেন সমস্তই তার মধ্যে। আমি দাবী শুধু ওই বাড়িটা করতে পারি তাই নয় । এ বাড়ি, এই ঘর, ওই সমস্ত টেবিল-চেয়ার-আয়না-দেয়ালগিরি, খাট, পালঙ্ক, বাড়ির দাসদাসী-আমলাকৰ্ম্মচারী, মায় তাদের মনিবটিকে পৰ্য্যন্ত দাবী করতে পারি তা জানেন কি ? বাবার হুকুম, বাবার হুকুম,—দেবেন এইসব ? (বিজয়া পাথরের মূৰ্ত্তির মত নীরবে নতমুখে বসিয়া রছিল । ) কেমন, দিতে পারবেন বলে মনে হয় ? বরঞ্চ একবার না হয় বিলাসবাবুর সঙ্গে নিরিবিলি পরামর্শ করবেন! হাঃ হাঃ হাঃ হাঃ—(বিজয়া মুখ তুলিতেই তাহার পাংশু মুখের প্রতি চাহিয়া নরেনের বিকট হাস্ত থামিল ) ( সভয়ে ) আপনি পাগল হলেন নাকি ? আমি কি সত্যই এইসব দাবী করতে যাচ্ছি, না, করলেই পাব ? বরঞ্চ, আমাকেই তো ধরে নিয়ে পাগলা-গারদে পুরে দেবে। বিজয়া। (গভৗরমুখে ) কই, দেখি বাবার চিঠি ? নরেন । কি হবে দেখে ? বিজয় । না দিন, আমি দেখব । নরেন। চিঠির তাড়াটা সেদিন থেকে এই কোটের পকেটেই রয়ে গেছে। এই নিন। আত্মসাৎ করবেন না যেন । পড়ে ফেরত দেবেন। পকেট হইতে এক বাগুিল চিঠি সে বিজয়ার সম্মুখে ফেলিয়া দিল । বিজয়া দ্রুতহস্তে বাধন খুলিয়া একটার পর একটা উণ্টাইতে উণ্টাইতে দু’খানা চিঠি বাছিয়া লইল— ] বিজয়া । এই তো বাবার হাতের লেখা । বাবা ! বাবা ! [চিঠি দুটা সে মাথায় রাখিয়া স্তব্ধ হইয়া বসিয়া রহিল। নরেন অন্ত চিঠিগুলি তুলিয়া নিঃশব্দে চলিয়া গেল। ] oto a