পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (চতুর্থ সম্ভার).djvu/৩৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্রই ঐখানেই থামতুম না। তিনি যা দিয়ে গেছেন সমস্ত জোর করে দখল করভূম, তার একতিলও ছেড়ে দিতুম না । ( টেবিলে মুখ রাখিয়া কাদিতে লাগিল ) নরেন। নলিনী ঠিকই বুঝেছিল বিজয়, আমি কিন্তু বিশ্বাস করিনি। ভাবতেই পারিনি আমার মত একটা অকেজো অক্ষম লোককে কারও প্রয়োজন আছে। কিন্তু সত্যই যদি এই অসঙ্গত খেয়াল তোমার মাথায় ঢুকেছিল শুধু একবার হুকুম করোনি কেন ? আমার পক্ষে এর স্বপ্ন দেখাও যে পাগলামি বিজয়া ! [ বিজয়া মুখের উপর আঁচল চাপিয়া উচ্ছ্বসিত রোদন সংবরণ করিতে লাগিল । নরেন পিছনে পদশব্দ শুনিয়া ফিরিয়া দেখিল দয়াল দাড়াইয়া দ্বারের কাছে । তিনি ধীরে ধীরে ঘরে আসিয়া বিজয়ার আসনের একাস্তে বসিয়া তাহার মাথায় হাত দিলেন, বলিলেন—] দয়াল । মা ! বিজয় একবার মুখ তুলিয়া দেখিয়া পুনরায় উপুড় হইয়া পড়িয়া মুখ গুজিয়ী কাদিতে লাগিল। দয়ালের চোখ দিয়া জল গড়াইয়া পড়িল, সস্নেহে মাথায় হাত বুলাইতে বুলাইতে বলিলেন– ] দয়াল। শুধু আমার দোষেই এই ভয়ানক অন্যায় হয়ে গেল মা, শুধু আমি এই দুর্ঘটনা ঘটালুম। তোমরা চলে গেলে নলিনীর সঙ্গে আমার এই কথাই হচ্ছিল, সে সমস্তই জানত । কিন্তু কে ভেবেছে নরেন মনে মনে কেবল তোমাকেই,— কিন্তু নিৰ্ব্বেধ আমি, সমস্ত ভুল বুঝে তোমাকে উন্টে খবর দিয়ে এই দুঃখ ঘরে ডেকে আনলুম। এখন বুঝি আর কোন প্রতিকার নাই ? ( তেমনি মাথায় হাত বুলাইয়া দিতে দিতে ) এর কি আর কোন উপায় হতে পারে না বিজয় ? বিজয়া । ( তেমনি মুখ লুকাইয়া ভগ্নকণ্ঠে ) না দয়ালবাবু, মরণ ছাড়া আর আমার নিষ্কৃতির পথ নেই। দয়াল । ছিমা, এমন কথা বলতে নেই । বিজয় । আমি কথা দিয়েছি দয়ালবাবু। তারা সেই কথায় নির্ভর করে সমস্ত আয়োজন সম্পূর্ণ করে এনেছেন। এ যদি ভাঙি সংসারে আমি মুখ দেখাব কেমন করে ? শুধু বাকী আছে মরণ— বলিতে বলিতে পুনরায় তাহার কণ্ঠরোধ হইল। দয়ালের চোখ দিয়াও আবার জল গড়াইয়া পড়িল। হাত দিয়া মুছিয়া বলিলেন—] দয়াল । নলিনী বললে, বিজয় কথা দিয়েছে, সই করে দিয়েছে-এ ঠিক । কিন্তু কোনটায় তার অন্তর সায় দেয়নি। তার সেই মুখের কথাটাই বড় হবে মামাবাবু, আর হৃদয় যাবে মিথ্যে হয়ে ? তার মামী বললে, ওর মা নেই, বাপ নেই,— একলা মেয়ে, আচার্ষ্য হয়ে তুমি এত বড় পাপ ক'রো না । ষে দেবতা হৃদয়ে বাস לר לא