পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (চতুর্থ সম্ভার).djvu/৩৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিজয়। পরেশের মা, কাল দুপুরে আমারে ওখানে তোমরা খাবে। তুমি, পরেশ, কালীপদ আর আমার মা বিজয়া । তাই নেমন্তশ্ন করতে এসেছি। জিজ্ঞাসা করলুম, নেমতন্ন কিসের আচাযিামশায়। বলেন, উৎসব আছে ? কিসের উৎসব দিদিমণি ? বিজয়ী ৷ জানিনে পরেশের মা। আমাকে গিয়ে বললেন, কাল দ্বি প্রহরে আমার ওখানে যেতে হবে মা । পালকি-বেহার। পাঠিয়ে দেব, ছেঁটে যেতে পারবে না। কিন্তু ততক্ষণে কিছু খেয়ো না যেন। জিজ্ঞাসা করলুম, কেন দয়ালবাবু ? বললেন, আমার ব্রত আছে । তুমি গিয়ে পা দিলে তবেই সে ব্রত সফল হবে। ভাবলাম মন্দির তো ? হয়ত কিছু-একটা করছেন । কিন্তু এমন কাণ্ড হবে জানলে স্বীকার করতুম না পরেশের [ রাসবিহারী প্রবেশ করিলেন } রাস । একি কাণ্ড ! এখনো যাওনি—চারটে বাজল যে ! পরেশের মা ! পালকি পাঠাবার কথা, এখনো আসেনি। রাস। এমনই তার কাজ । পালকি যদি সে না পেয়েছিল একটা খবর পাঠালে না কেন ? আমি যোগাড় করে দিতুম। মধ্যাহ্ন ভোজন যে সায়াহ করে দিলে, ভারী ঢিলে লোক, এইজন্যই বিলাস রাগ করে । আবার আমাকেও পীড়াপীড়ি— সন্ধ্যার পরে যেতেই হবে । [ ছুটিয়া পরেশের প্রবেশ ] পরেশ । পালকি এসতেছে মা-ঠান। { রাসবিহারীকে দেখিয়াই সে সঙ্কুচিত হইয়া পড়িল । ] রাস। বলিস কি রে? এতেছে ? তোরই মোচ্ছব রে ! দেখি পয়েশ, নেমস্তন্ন খেয়ে তোকে না ডুলিতে করে আনতে হয় । ( বিজয়ার প্রতি ) যাও মা, আর দেরি করে না—বেলা আর নেই। গিয়ে পালকিটা পাঠিয়ে দিও—আমি আবার যাব । না গেলে তে রক্ষে নেই, মান-অভিমানের সীমা থাকবে না, সে এ বোঝে না যে দু'দিন বাদে আমার বাড়িতেও উৎসব, –কাজের চাপে নিশ্বাস নেবার অবকাশ নেই আমার। কিন্তু কে সে কথা শোনে ? রাসবিহারীবাবু, পায়ের ধুলো একবার দিতেই হবে ! কাজেই না গিয়ে উপায় নেই। রাত হলে কিন্তু যেতে পারব না বলে দিও। যাও তোমরা মা,-আমি ততক্ষণ মিস্ত্রীর কাজের হিসাবটা দেখে রাখি গে। প্রায় ষাট-সত্তর জন উদয়াস্ত খাটছে-প্রাসাদতুল্য বাড়ি, কাজের কি শেষ আছে। অতিথিরা যারা আসবেন, বলতে না পারেন আয়োজনের কোথাও ক্রটি আছে। এই বলিয়া তিনি প্রস্থান করিলেন, অন্যান্য সকলেও বাহির হইয়া গেল। ] ליסס