পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (চতুর্থ সম্ভার).djvu/৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্রীকান্ত সিদ্ধহস্ত। গহর এই প্রলোভনে মজিয়াছে। তাহাকে কবিতা গুনায়, তাহাকে দিয়া ভুল সংশোধন করিয়া লয়। আর কমললত একজন যুৰঙী বৈষ্ণবী—এই আখড়াতেই বাস করে । সে দেখিতে ভালো, গান গাহে ভালো, তাহার কথা শুনিলে লোকে মুগ্ধ হইয়া ষায় । বৈষ্ণব-সেবায় গহর মাঝে মাঝে টাকাকড়ি দেয়, আখড়ার সাবেক প্রাচীর জীর্ণ হইয়া ভাঙিয়া গিয়াছিল, গহর নিজ ব্যয়ে তাহা মেরামত করিয়া দিয়াছে । কাজটা তাহাদের সম্প্রদায়ের লোকের অগোচরে সে গোপনে করিয়াছে । ছেলেবেলায় এই আখড়ার কথা শুনিয়াছিলাম আমার মনে পড়িল । পুরাকালে মহাপ্রভুর কোন এক ভক্ত শিষ্য এই আখড়ার প্রতিষ্ঠা করিয়াছিলেন, তদবধি শিন্যপরস্পরায় বৈষ্ণবেরা ইহাতে বাস করিয়া আসিতেছে। অত্যন্ত কৌতুহল জন্মিল, বলিলাম, নবীন, আখড়াটা আমাকে একবার দেখিয়ে দিতে পারবে ? নবীন ঘাড় নাড়িয়া অস্বীকার করিল, বলিল, আমার অনেক কাজ আর আপনিও ত এই দেশের মানুষ, চিনে যেতে পারবেন না ? অাধ কোশের বেশি নয়, ঐ মুম্বুধের রাস্তা দিয়ে সিধে উত্তরমুখে চলে গেলে আপনি দেখতে পাবেন, কাউকে জিজ্ঞাসা করতে হবে না । সামনের দীঘির পাড়ে বকুলতলায় বৃন্দাবনলীলা চলচে, দূর থেকেই আওয়াঙ্গ কানে যাবে—ভাবতে হবে না । আমার যাওয়ার প্রস্তাবট নবীন গোড়াতেই পছন্দ করে নাই । জিজ্ঞাসা করিলাম, কি হয় সেখানে—কীৰ্ত্তন ? নবীন বলিল, ই, দিনরাত । খুঞ্জনি-কৰ্ত্তালের কামাই নেই । হাসিয়া বলিলাম, সে ভালোই নবীন। যাই, গহরকে ধরে আনিগে । এবার নবীন হাসিল, বলিল, ই যান ; কিন্তু দেখবেন কমলিলতার কেতন গুনে নিজেই যেন আটকে যাবেন না । দেখি, কি হয় । এই বলিয়া হাসিয়া কমললতা বৈষ্ণবীর আখড়ার উদেখে অপরাহ্লবেলায় যাত্রা করিলাম । আখড়ার ঠিকানা যখন মিলিল তখন সন্ধ্যা বোধকরি উত্তীর্ণ হইয়াছে, দুর হইতে কীৰ্ত্তম বা খোল-করতালের শব্দমাত্র পাই নাই, সুপ্রাচীন বকুল বৃক্ষট সহজেই চোখে পড়িল, নীচে ভাঙাচোরা বেদী একটা আছে, কিন্তু লোকজন কাহাকেও দেখিতে পাইলাম না । একটা ক্ষীণ পথের রেখা আঁকিয়া-বাকিয়া প্রাচীরের ধার ৰেষিয়া নদীর দিকে গিয়াছে, অনুমান করিলাম হয়ত ওদিকে কাহারও সন্ধান মিলিতে পারে, অতএব সেদিকেই পা বাড়াইলাম। ভুল করি নাই, শীর্ণ সঙ্কীর্ণ শৈবালাচ্ছন্ন gచి هس-}s