পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (চতুর্থ সম্ভার).djvu/৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্রহ তাহার বিগত-জনমের রুদ্ধদ্বারে হাত পাতিয়া অপরাধের সাত্বনা মাগিতেছে । তাহার কথা শুনিয়া বুঝিতে পারি আমার ‘শ্ৰীকান্ত’ নামটাকেই পাথেয় করিয়া আজ সে খেয়া ভাসাইতে চায় ! বৈষ্ণবী চা আনিয়া দিল ; সবই নূতন ব্যবস্থা, পান করিয়া গভীর আনন্দ লাভ করিলাম। মামুষের মন কত সহজেই না পরিবৰ্ত্তিত হয়—আর যেন তাহার বিরুদ্ধে কোন নালিশ নাই । জিজ্ঞাসা করিলাম, কমললতা, তোমরা কি গুড়ি ? কমললত হাসিয়া বলিল, না, সোনার বেনে । কিন্তু তোমাদের কাছে ত প্রভেদ cनझे, ७ ईश्-शे ७क । কহিলাম, অস্তত: আমার কাছে তাই বটে। দুই-ই এক কেন, সবাই এক হলেও ক্ষতি ছিল না । বৈষ্ণবী বলিল, তাই ত মনে হয় । তুমি গহরের মায়ের হাতেও খেয়েচ। বলিলাম, তাকে তুমি জানো না । গহর বাপের মত হয়নি, তার মায়ের স্বভাব পেয়েছে -এমন শাস্ত, আত্মভোলা মিষ্টি মানুষ আর কখনও দেখেচ ? ওর মা ছিলেন তেমনি । একবার ছেলেবেলায় গহরের বাপের সঙ্গে তার ঝগড়ার কথা আমার মনে আছে । কাকে নাকি লুকিয়ে অনেকগুলো টাকা দেওয়া নিয়ে ঝগড়া বাধল। গহরের বাপ ছিল বদরাগী লোক, আমরা ত ভয়ে গেলাম পালিয়ে । ঘণ্টাকয়েক পরে চুপি চুপি ফিরে এসে দেখি গহরের মা চুপ করে বসে। গহরের বাপের কথা জিজ্ঞাসা করতে প্রথমটা তিনি কথা কইলেন না, কিন্তু আমাদের মুখের পানে চেয়ে থেকে হঠাৎ একেবারে হেসে লুটিয়ে পড়লেন । চোখ দিয়ে ফোটাকতক জল গড়িয়ে পড়ল। এ অভ্যাস তার ছিল । বৈষ্ণবী প্রশ্ন করিল, এতে হাসির কি হ’লে ? বলিলাম, আমরাও ত তাই ভাবলাম। কিন্তু হাসি থামলে কাপড়ে চোখ মুছে ফেলে বললেন, আমি কি বোকা মেয়ে বাপু ! ও দিব্যি নেয়ে-ধেয়ে নাক ডাকিয়ে ঘুম্বচ্চে, আর আমি না থেয়ে উপৃস করে রেগে জলে-পুড়ে মরচি। কি দরকার বল ত ! আর বলার সঙ্গে সঙ্গেই সমস্ত রাগ অভিমান ধুয়ে-মুছে নিৰ্ম্মল হয়ে গেল। মেয়েদের এ যে কতবড় গুণ তা ভুক্তভোগী ছাড়া আর কেউ জানে না। ’ বৈষ্ণবী প্রশ্ন করিল, তুমি কি ভুক্তভোগী নাকি গোসাই ? একটু বিব্রত হইলাম। প্রশ্নটা তাহাকে ছাড়িয়া যে আমার ঘাড়ে পড়িবে তাহ ভাবি নাই। বলিলাম, সবই কি নিজে ভুগতে হয় কমললতা, পরের দেখেও শেখা 歌8