পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (চতুর্থ সম্ভার).djvu/৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্ৰীকান্ত কমললতা কিন্তু কেঁদে কেঁদে সারা হয়ে যাবে। আমাদের কথাটা ইহার কানেও গিয়াছে, জানিয়া মনে মনে অত্যন্ত বিরক্ত হইলাম, কহিলাম, সে কাদতে যাবে কিসের জন্তে ? গোসাইজী একটু হাসিয়া কহিলেন, তুমি জানো না বুঝি ? 과 | ওর স্বভাবই এমনি । কেউ চলে গেলে ও যেন শোকে সারা হয়ে যায়। কথাটা আরও খারাপ লাগিল, বলিলাম, যার স্বভাব শোক করা সে করবেই, আমি তাকে থামাব কি দিয়ে ? কিন্তু বলিয়াই তাহার চোখের পানে চাহিয়া ঘাড় ফিরাইয়া দেখিলাম আমার পিছনে দাড়াইয়া কমললতা । দ্বারিকাদাস কুষ্ঠিতভাবে বলিলেন, ওর ওপরে রাগ ক’রো না গোসাই, শুনেচি ওরা তোমার যত্ন করতে পারেনি, অমুখে পড়ে তোমাকে অনেক খাটিয়েচে, অনেক কষ্ট দিয়েচে । আমার কাছে কাল নিজেই বড় দুঃখ করছিল। আর বোষ্টম-বৈরাগীর আদর-ষত্ব করবার কিই বা আছে । কিন্তু আবার যদি কখনো তোমার এদিকে আসা হয় ভিখারীদের দেখা দিয়ে যেয়ে । দেবে ত গোসাই ? ঘাড় নাড়িয়া বাহির হইয়া আসিলাম, কমললতা সেখানেই তেমনি দাড়াইয়া রছিল। কিন্তু অকস্মাৎ এ কি হইয়া গেল ! বিদায়-গ্রহণের প্রাক্কালে কত কি বলার, কত কি শোনার কল্পনা ছিল, সমস্ত নষ্ট করিয়া দিলাম। চিত্তের দুৰ্ব্বলতার স্নানি অস্তরে ধীরে ধীরে সঞ্চিত হইতেছিল তাহা অমুভব করিতেছিলাম, কিন্তু উত্যক্ত অসহিষ্ণু মন এমন অশোভন রূঢ় তার যে নিজের মধ্যাদা ধৰ্ব্ব করিয়া বসিবে তাহা স্বপ্নেও ভাবি নাই ! নবীন আসিয়া উপস্থিত হইল। সে গহরের খোজে আসিয়াছে । কাল হইতে এখনও সে ফিরে নাই । আশ্চর্ষ্য হইয়া গেলাম—সে কি নবীন, সে ত এখানেও আর আসে না ! নবীন বিশেষ বিচলিত হইল না, বলিল, তবে বোধ হয় কোন বনেবাদাড়ে ঘুরচে–নাওয়া-ধাওয়া বদ্ধ করেচে-এইবার কখন সাপে কামড়ানোর খবরটা পেলেই নিশ্চিন্দ্রি হওয়া যায় । তার সন্ধান করা ত দরকার নবীন ? দরকার ত জানি, কিন্তু খুজিব কোথায় । বনে-জঙ্গলে ঘুরে ঘুরে নিজের প্রাণটা ত আর দিতে পারিনে বাৰু, কিন্তু তিনি কোথায় ? একবার জিজ্ঞেস করে যেতে চাই যে ? তিনিটা কে ? 4ҹo to دس-} 8