পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ত্রয়োদশ সম্ভার).djvu/১২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পথের দাবী ডাক্তার কছিলেন, তালই ত করেচে। মরে ত সে মরুক না । কিন্তু আমার অতিথি ? ভারতী বলিল, মেয়েদের প্রতি আপনার অসীম অনুগ্রহ। এটা কিন্তু হৈম না হয়ে নরহরি হলে আপনি এতক্ষণ উৰ্দ্ধশ্বাসে দৌড়তেন। ডাক্তার কহিলেন, না হয় উৰ্দ্ধশ্বাসে দোঁড়চ্চি। কিন্তু অতিথি ? আমি যাচ্চি, বলিয়া ভারতী আলো হাতে পরক্ষণেই নীচে আসিয়া দ্বার খুলিয়া দাড়াইল, কহিল, বাস্তবিক আর দেরি করবেন না ডাক্তারবাবু, যান। কিন্তু খ্ৰীষ্টানের আতিথ্য কি উনি স্বীকার করবেন ? ডাক্তার মনে মনে একটু বিপদগ্ৰস্ত হইয়া কহিলেন, একে ফেলে আমি যাই কি করে ভারতী ? হাসপাতালে পাঠাবার বাবস্থা করনি কেন ? ভারতী রাগ করিয়া কহিল, যা করতে হয় করুন গে ডাক্তারবাৰু, আপনার পায়ে পড়ি আর দেরি করবেন না। আমার অনেক অভ্যাস আছে, ওঁকে আমি সামলাতে পারবো-আপনি দয়া করে একটু শীঘ্র যান। অপূৰ্ব্ব এতক্ষণ চুপ করিয়াই ছিল । কিন্তু তাহার জন্য একটা লোক মারা পড়িবে ইহা ত কোন মতেই হইতে পারে না ! সে কি একটা বলিতে গেল, কিন্তু তাহার পূৰ্ব্বেই ডাক্তার দ্রুতবেগে অদৃপ্ত হইয়া গেলেন। ১৩ নীচেকার ঘরের দরজা জানালা ভারতী বন্ধ করিতে ব্যাপৃত রহিল, অপূৰ্ব্ব সিড়ি দিয়া উপরে উঠিয়া তাহার ঘরে প্রবেশ করিল এবং ভাল দেখিয়া একটা আরাম কেদার বাছিয়া লইয়া হাত-পা ছড়াইয়া শুইয়া পড়িল । চোখ বুজিয়া দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলিয়া বলিল, আঃ ! সে যে কতখানি প্রান্ত হইয়াছিল তাহা উপলব্ধি করিল। মিনিট কয়েক পরে ভারতী উপরে আসিয়া হাতের আলোটা যখন তে-পায়ার উপর রাখিতেছে অপূৰ্ব্ব তখন টের পাইল, কিন্তু সহসা তাহার এমন লজ্জা করিয়া উঠিল যে, এই ক্ষণকালের মধ্যে ঘুমাইয়া পড়ার স্তায় একটা অত্যন্ত অসম্ভব ভান করার অপেক্ষা আর কোন সঙ্গত ছলনাই তাহার মনে আসিল না । অথচ, ইহা নূতন নহে। ইতিপূর্বেও তাহার একঘরে রাত্রি যাপন করিয়াছে, কিন্তু সরমের বাষ্পও তাহার অন্তরে উদয় হয় নাই। মনে মনে ইহারই কারণ অঞ্জলন্ধান করিতে গিয়া তাহার তেওয়ারীকে মনে পড়িল । সে তখন মরণাপন্ন, তাহার জ্ঞান ছিল } }}