পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ত্রয়োদশ সম্ভার).djvu/১৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পথের দাবী অপূৰ্ব্ব রাগ করিয়া বলিল, দোষ নেই ? ক্রীশ্চানের জন্য কি সৎ-অসৎ বস্তু নেই, নিজেদের সমাজের কাছে তাদের জবাবদিহি করতে হয় না ? ভারতী উত্তর দিল, কে আছে আমার যে জবাবদিহি করবো ? কার মাথাব্যথা পড়েচে আমার জন্যে, আপনি বলুন ? অপূৰ্ব্ব সহসা কোন প্রত্যুবর খুজিয়া না পাইয়। শুধু বলিল, এসব আপনার চালাকি। আপনি ঘরে ফিরে চলুন। আমাকে আরও পাচ জায়গায় যেতে হবে । আপনার ভাল না লাগে আপনি ফিরে যান । ফিরে যান বললেই কি আপনাকে এখানে রেখে আমি যেতে পারি ? তাহলে সঙ্গে থাকুন। মানুধের প্রতি মানুষে কত অত্যাচার করচে চোখ মেলে দেখতে শিখুন ! কেবল ষ্টোয়া-ছুয়ি বঁচিয়ে, নিজে সাধু হয়ে থেকে ভেবেচেন পুণ্য সঞ্চয় করে একদিন স্বর্গে যাবেন ? মনেও করবেন না । বলিতে বলিতে ভারতীর মুখের চেহারা কঠোর এবং গলার স্বর তীক্ষ হইয়া উঠিল, এই মৃত্তি ও কণ্ঠ অপূৰ্ব্বর অত্যন্ত পরিচিত । ভারতী কহিল, ওই মেয়েটার মা এবং যদু যে অপরাধ করেচে সে শুধু ওদের দণ্ড দিয়েই শেষ হবে ? আপনি তার কেউ নয় ? কথখনে না। ডাক্তারবাবুকে না জানা পৰ্য্যন্ত আমিও ঠিক এমনি করেই ভেবে এসেচি। কিন্তু আজ আমি নিশ্চয় জানি, এই নরককুণ্ডে যত পাপ জমা হবে তার ভার আপনাকে পর্য্যন্ত স্বর্গের দোর থেকে টেনে এনে এই নরককুণ্ডে ডোবাবে । সাধ্য কি আপনার এই দুষ্কৃতির ঋণ শোধ না করে পরিত্রাণ পান । আমরা নিজের গরজেই আলি অপূৰ্ব্ববাবু, এই উপলব্ধিই আমাদের পথের দাবী'র সবচেয়ে বড় সাধনা । চলুন। অপূৰ্ব্ব নিরীহ ও নিম্পূহের ন্যায় কহিল, চলুন । ভারতীর কথা কিন্তু সে বুঝিতেও পারিল না, বিশ্বাসও করিল না । কিছুদূরে একটা সেগুন গাছ ছিল, ভারতী আঙুল দিয়া দেখাইয়া কহিল, ওই সামনে ক’ঘর বাঙালী থাকে,—চলুন । অপূৰ্ব্ব জিজ্ঞাসা করিল, বাঙালী ভিন্ন অপর জাতের মধ্যে আপনার কাজ করেন না.? - ভারতী বলিল, করি । সকলকেই আমাদের প্রয়োজন, কিন্তু প্রেসিডেন্ট ছাড়া আর ত কেউ সকলের ভাষা জানে না, তিনি স্বস্থ থাকলে এ-কাজ উরিই, আমার নয় । তিনি ভারতবর্ষের সমস্ত ভাষা জানেন ? श्ा८िनन । 2\ove