পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ত্রয়োদশ সম্ভার).djvu/১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*zथब्र प्रांरौ ছেলের কথাগুলি মা ঠিক যে বিশ্বাস করিলেন তাহা নয়, কিন্তু একসময়ে নাকি এই লইয়া তাহাকে অনেক উদ্বেগ ভোগ করিতে হইয়াছে, তাই মনে মনে চিস্তিত হইলেন। দেশের পশ্চিম দিগন্তে যে একটা মেঘের লক্ষণ দেখা দিয়াছে এ সংবাদ তিনি জানিতেন । র্তাহার প্রথমেই মনে হইল তখন অপূৰ্ব্বর পিতা জীবিত ছিলেন, কিন্তু এখন তিনি পরলোকগত । বিনোদ মায়ের মুখের দিকে চাহিয়া বুঝিল, কিন্তু তাহার বাহিরে যাইবার ত্বরা ছিল, কহিল, বেশ ত মা, সে তো আর কালই যাচ্ছে না, সবাই একসঙ্গে বসে যা হোক একটা স্থির করা যাবে। এই বলিয়া সে একটু দ্রুতপদেই বাহির হইয়া গেল। ২ জাহাজের কয়টা দিন অপূৰ্ব্ব চিড়া চিবাইয়া সন্দেশ ও ডাবের জল খাইয়া সৰ্ব্বাঙ্গীণব্রাহ্মণত্ব রক্ষা করিয়া অৰ্দ্ধমৃতবৎ কোনমতে গিয়া রেজুনের ঘাটে পৌছিল । নবপ্রতিষ্ঠিত বোথা কোম্পানীর জন-দুই দরওয়ান ও একজন মাদ্রাজী কৰ্ম্মচারী জেটিতে উপস্থিত ছিলেন, ম্যানেজারকে র্তাহারা সাদর সম্বৰ্দ্ধনা করিলেন । তিনি ত্রিশ টাকা দিয়া বাসা ভাড়া করিয়া আফিসের খরচায় যথাযোগ্য আসবাব-পত্রে ঘর সাজাইয়া রাখিয়াছেন এ-সংবাদ দিতেও বিলম্ব করিলেন মা । ফাল্গুন মাস শেষ হইতে চলিয়াছে, গরম মন্দ পড়ে নাই। সমুদ্র-পথের এই প্রাণান্ত বিড়ম্বনী-তোগের পর নিরালা গৃহের সজ্জিত শয্যার উপরে হাত-পা ছড়াইয়া একটুখানি গুইতে পাইবে কল্পনা করিয়া সে যথেষ্ট তৃপ্তি অনুভব করিল। পাচক ব্রাহ্মণ সঙ্গে আসিয়াছিল, হালদার-পরিবারে বহুদিনের চাকরিতে তাহার নিখুত শুদ্ধাচারিত করুণাময়ীর কাছে সপ্রমাণ হইয়া গেছে । তাই বাড়ির বহু অস্থবিধা সত্বেও এই বিশ্বস্ত লোকটিকে সঙ্গে দিয়া মা অনেকখানি সান্তনা লাভ করিয়াছিলেন । আবার শুধু কেবল পাচকই নয়, পাক করিবার মত কিছু কিছু চাল ডাল দ্বি-তেল গুড়া মশলা মায় আলু-পটল পৰ্য্যন্ত সঙ্গে দিতে তিনি বিশ্বত হন নাই। স্বতরাং ঈষদ্ধক অন্ন-ব্যঞ্জনে মুখের শুকনা চিড়ার স্বাদটাও যে সে অবিলম্বে ফিরাইতে পারিবে এ ভরসাও তাঁহার মনের মধ্যে বিদ্যুৎ-স্ফুরণের স্তায় চমকিয়া গেল। গাড়ি ভাড়া হইয়া আসিলে কৰ্ম্মচারী বিদায় গ্রহণ করিলেন, কিন্তু মোট-ঘাট জিনিসপত্র লইয়া অফিসের দরওয়ানজী পথ দেখাইয়া সঙ্গে চলিল, এবং একটানা জলযাত্রী a