পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ত্রয়োদশ সম্ভার).djvu/১৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ কিছুক্ষণেই বাহিরে গাড়ির শব্দে বুঝা গেল তাহারা চলিয়া গেলেন । তখন ডাক্তার বলিলেন, তোমার কি মনে হয় অপূৰ্ব্ব বাসায় চলে গেছে ? ভারতী মাথা নাড়িয়া বলিল, না, খুব সম্ভব আশে-পাশে কোথাও আছেন, একটু খুজে দেখলেই পাওয়া যাবে। আপনার সঙ্গে আর একবার দেখা না ক’রে তিনি কখনো যাবেন না । 壕 ডাক্তার হাসিয়া বলিলেন, তাহলে দশ-পনের মিনিটের মধ্যেই এ কাজটা তার সেরে নেওয়া আবশ্বক। তার বেশি ত আমি সময় দিতে পারব না छांझे ! না, এর মধ্যেই তিনি এসে পড়বেন, এই বলিয়া ভারতী শুধু যে কেবল উপস্থিত মত ডাক্তারের কথার একটা জবাব দিল তাই নয়, সে আপনাকে আপনি ভরসা দিল । একাকী এই অন্ধকারে অপূৰ্ব্ব কিছুতেই যুইবে না, অতএব কোথাও নিকটেই আছে এ বিষয়ে সে যেমন নিশ্চিত ছিল, তাহাদের অশেষ ভক্তি ও শ্রদ্ধাভাজন এই অতিমানবের বিদায়ের পূর্বক্ষণে আর একবার সর্বাস্তকরণে র্তাহার ক্ষমা ভিক্ষা করিয়া লওয়ারও প্রয়োজনীয়তা সম্বন্ধেও সে তেমনি নিঃসংশয় ছিল । নানা দিক দিয়া নানা কারণে আজ অপূৰ্ব্ব বহু অপরাধ জমা করিয়াছে, সময় থাকিতে তাহাকে দিয়াই সেগুলোর ক্ষালন করিয়া না লইয়াই বা ভারতী বঁাচে কি করিয়া ? কিন্তু সেই অমূল্য স্বল্পকালটুকু বৃথায় শেষ হইয়া আসিতে লাগিল,—অপূৰ্ব্বর দেখা নাই! আঁধার দ্বার-পথে ভারতীর চঞ্চল চোখের দৃষ্টি তীক্ষ হইয়া আসিল এবং উৎকর্ণ চিত্ত বাহিরে পরিচিত পদশব্দের প্রতীক্ষায় একেবারে অধীর হইয়া উঠিল । কোথাও সে হাতের কাছেই আছে, একবার ইচ্ছা হইল ছুটিয়া গিয়া সে এক মুহুর্তে খুজিয়া আনে, কিন্তু এতখানি ব্যাকুলত প্রকাশ করিতে আজ তাহার অত্যন্ত লজ্জা বোধ হইল। ডাক্তার তাহার স্ট্র্যাপ-বাধা বেঁচেকার প্রতি দৃষ্টিপাত করিয়া হাই তুলিয়া উঠিয়া দাড়াইলেন, ভারতী দেওয়ালের ঘড়ির দিকে চাহিয়া দেখিল আর মিনিট পাচ-ছয়েক অধিক সময় নাই, কহিল, আপনি হেঁটেই ষাবেন ? ডাক্তার ঘাড় নাড়িয়া বলিলেন, না। ছটাে কুড়ি মিনিটে সম্বর রাস্তার উপর দিয়ে খুব সম্ভব একটা ঘোড়ার গাড়ি ফিরে যাবে, চলতি গাড়ি-গণ্ডা-ছয়েক পয়সা ভাড়া দিলেই স্টেশনে পৌঁছে দেবে। - ভারতী বলিল, পয়সা না দিলেও দেবে। কিন্তু ষাবার পূৰ্ব্বে স্থমিত্রাদিদিকে একবার দেখা দিয়ে ষাবেন না ? তিনি সত্যই পীড়িত। ডাক্তার কছিলেন, আমি ত বলিনি তিনি অসুস্থ ন’ন । কিন্তু ডাক্তার না দেখালেই বা সারবে কি করে ? $o