পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ত্রয়োদশ সম্ভার).djvu/২৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ఫ్చిపి স্বপ্ন-চালিতের স্তায় ভারতী নৌকায় আসিয়া বসিল এবং নদীপথের সমস্তক্ষণ নিৰ্ব্বাক হইয়া রহিল। রাত্রি বোধ হয় তৃতীয় প্রহর হইবে ; আকাশের অসংখ্য নক্ষত্রালোকে পৃথিবীর অন্ধকার স্বচ্ছ হইয়া আসিয়াছে, নৌকা আসিয়া সেই ঘাটে ভিড়িল। হাত ধরিয়া ভারতীকে নামাইয়া দিয়া সব্যসাচী নিজে নামিবার উপক্রম করিতে ভারতী বাধা দিয়া কহিল, আমাকে পৌঁছে দিতে হবে না দাদা, আমি আপনিই যেতে পারবো । একলাটি ভয় করবে না ? করবে। কিন্তু তা’ বলে তোমাকে আসতে হবে না | সব্যসাচী কহিলেন, এইটুকু বই ত নয়, চল না তোমাকে খপ করে পৌঁছে দিয়ে জাসি, বোন। এই বলিয়া তিনি নীচে সিড়ির উপরে পা বাড়াইতেই ভারতী হাতজোড় করিয়া কহিল, রক্ষে কর দাদা, তুমি সঙ্গে গিয়ে ভয় আমার হাজার গুণে বাড়িয়ে দিয়ে না। তুমি বাসায় যাও। বাস্তবিক, সঙ্গে ধাওয়া ষে অত্যস্ত বিপজ্জনক তাহাতে সঙ্গেহ নাই। তাই ডাক্তার আর জিদ করিলেন না, কিন্তু ভারতী চলিয়া গেলেও বহুক্ষণ পৰ্য্যন্ত সেই নদীকূলে স্থির হইয়া দাড়াইয়া রহিলেন । বাসায় আসিয়া ভারতী চাবি খুলিয়া ভিতরে প্রবেশ করিল, আলো জালিয়া চারিদিক সাবধানে নিরীক্ষণ করিল, তাহার পরে কোনমতে একটা শষ্যা পাতিয়া লইয়া গুইয়া পড়িল। দেহ অবশ, মন অবসর, তন্ত্রাতুর দুই চক্ষু প্রাস্তিতে মুদিয়া রছিল, কিন্তু কিছুতেই ঘুমাইতে পারিল না। ঘুরিয়া ফিরিয়া সব্যসাচীর এই কথাই তাহার বারংবার মনে হইতে লাগিল যে, এই পরিবর্তনশীল জগতে সত্যোপলব্ধি বলিয়া কোন নিত্যবন্ত নাই। তাহার জন্ম আছে, মৃত্যু আছে ; যুগে যুগে, কালে কালে মানবের প্রয়োজনে তাহাকে নূতন হুইয়া আসিতে হয়। অতীতের সত্যকে বর্তমানে স্বীকার করিতেই হইবে এ বিশ্বাস ভ্রান্ত, এ ধারণা কুসংস্কার। ভারতী মনে মনে বলিল, মানবের প্রয়োজনে, অর্থাৎ ভারতের স্বাধীনতার প্রয়োজনে নূতন সত্য স্বাক্ট করিয়া তোলাই ভারতবাসীর সব চেয়ে বড় সত্য। অর্থাৎ ইহার কাছে কোন পন্থাই অসত্য নয় ; কোন উপায়, কোন অভিসন্ধিই হেয় নয়। এই ষে কারখানার কাচারী কুলি-মজুরদের সংপথে আনিবার উত্তম, এই ষে তাহাদের সন্তানদের বিস্তাশিক্ষা দিবার আয়োজন, এই যে তাহাজের নৈশ-বিদ্যালয়,-ইহার ♥ ♥ፃ