পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ত্রয়োদশ সম্ভার).djvu/২৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পথের দাৰী হাঙ্গামা ভারতী, ওখানে সুবিধে হবে না। তাছাড়া এই শনিবারের স্টিমারেই আমি ৰাড়ি ষাবো । ভারতী বলিল, শনিবারের এখনো চার দিন দেরি। মায়ের মৃত্যুর পরে হাঙ্গামা ষে একটু থাকে সে অামি জানি, কিন্তু সইতে পারবো না আমি, আর পারবে এই অতিথিশালার লোকে ? চল । অপূৰ্ব্ব মাথা নাছিয়া বলিল, না। ভারতী কহিল, না বললেই যদি এই অবস্থায় ফেলে রেখে তোমাকে ষেতে পারতাম, আমি আসতাম না, অপূৰ্ব্ববাবু। এই বলিয়া সে এক মূহূৰ্ত্ত নিঃশৰে থাকিরা কহিল, এতদিনের পরে তোমাকে ঢেকে বলবার, লজ্জা করে বলবার, আর আমার কিছুই নেই। মায়ের শেষ কাজ বাকী—শনিবারের জাহাজে তোমাকে বাড়ি ফিরে যেতেই হবে এবং তার পরে যে কি হবে সেও আমি জানি । তোমার কোন ব্যবস্থাতেই আমি বাধা দেব না, কিন্তু এ সময়ে এ ক’টা দিনও যদি তোমাকে চোখের ওপর না রাখতে পারি, ত তোমারি দিব্বি করে বলচি, বাসায় ফিরে গিয়ে আমি বিষ খেয়ে মরবো। মায়ের শোক তাতে বাড়বে বই কমবে না, অপূৰ্ব্ববার। অপূৰ্ব্ব অধোমুখে মিনিট দুই চুপ করিয়া রহিল, তাহার পরে উঠয় দাড়াইয়া বলিল, চাকরটাকে তাহলে ডাকো, জিনিসপত্রগুলো সব বেঁধে ফেলুক । জিনিসপত্র সামান্তই ছিল, গুছাইয়া বাধিয়া গাড়িতে তুলিতে আধঘণ্টার অধিক সময় লাগিল না । পথের মধ্যে ভারতী জিজ্ঞাসা করিল, দাদা আসতে পারলেন না ? অপূৰ্ব্ব কহিল, না, তার ছুটি হোলো না। এখানকার চাকরি কি ছেড়ে দিয়েচ ? ই, সে এক রকম ছেড়েই দেওয়া । মার কাজ-কৰ্ম্ম চুকে গেলে কি এখন বাড়িতেই থাকবে ? অপূৰ্ব্ব কহিল, না। মা নেই, প্রয়োজনের অতিরিক্ত একটা দিনও ও বাড়িতে আমি থাকতে পারবে না। শুনিয়া ভারতীর মুখ দিয়া শুধু একটা দীর্ঘশ্বাস বাহির হইয়া আসিল । ቆፃፃ