পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ত্রয়োদশ সম্ভার).djvu/২৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

NOෆ পরিত্যক্ত, পতনোয়ুথ, ঘন বনাচ্ছন্ন যে জীৰ্ণমঠের মধ্যে একদিন অপূৰ্ব্বর অপরাধের বিচার হইয়াছিল, আজ আবার সেই কক্ষেই পথের দাবী আহূত হইয়াছে। সে দিনের সেই অবরুদ্ধ গৃহতলে ধে দুর্জয় ক্রোধ ও নিৰ্ম্মম প্রতিহিংসার অগ্নি দাউ দাউ করিয়া জলিয়াছিল, আজ তাহার স্ফুলিঙ্গমাত্র নাই। সে বাদী নাই, প্রতিবাদী নাই, কাহারো বিরুদ্ধে কাহারো নালিশ নাই, আজ শঙ্কা ও নৈরাপ্তের দুঃসহ বেদনায় সমস্ত সভা নিম্প্রভ, বিষন্ন, ম্ৰিয়মাণ। ভারতীর চোখের কোণে অশ্রুবিন্দু-মুমিত্রা অধোমুখে নীরব, স্থির । তলওয়ারকর ধরা পড়িয়াছে ; রক্তাক্ত, ক্ষত-বিক্ষত দেহে সে জেলের হাসপাতালে,—আজও তাহার ভাল করিয়া জ্ঞান হয় নাই । তাহার স্ত্রী শিশুকন্ত। লইয়া পথে পথে ঘুরিয়া অনেক দুঃখে কাল সন্ধ্যায় কে একজন মারহাটি ব্রাহ্মণের গৃহে আশ্রয় পাইয়াছে ; সুমিত্র সন্ধান লইয়া তাহার পিতৃগৃহুে আজ তার করিয়াছে, কিন্তু এখনও জবাব আসে নাই । ভারতী ধীরে ধীরে জিজ্ঞাসা করিল, তলওয়ারকরবাবুর কি হবে দাদা ? ডাক্তার কহিলেন, হাসপাতাল থেকে যদি বেঁচে ওঠে জেল খাটবে। ভারতী মনে মনে শিহরিয়া উঠিল, বলিল, না বাঁচতেও ত পারেন ? ডাক্তার কহিলেন, অন্ততঃ অসম্ভব নয়। তারপরে সুদীর্ঘ কারাবাস । ভারতী ক্ষণকাল চুপ করিয়া থাকিয়া প্রশ্ন করিল, তার স্ত্রী, তার ছোট্টমেয়ে,— তাদের কি হবে ? সুমিত্রা এ কথার জবাব দিয়া কহিল, হয়ত দেশ থেকে তার বাপ এসে নিয়ে যাবেন । ভারতী বলিল, হয়ত! ধরুন, যদি কেউ না আসেন ? যদি কেউ না থাকে ? ডাক্তার হাসিলেন, বলিলেন, বিচিত্র নয় । সে ক্ষেত্রে মাস্থ্য অকস্মাৎ মারা গেলে তার নিরুপায় বিধবার ষে দশা হয়, এদেরও তাই হবে। একটুধানি থামিয়া কহিলেন, আমরা গৃহী নই, আমাদের ধনসম্পদ নেই, বিদেশীর আইনে নিজের জন্মভূমিতে আমাদের মাথা রাখবার ঠাই নেই,—বন্ত পশুর মত আমরা বনে লুকিয়ে বেড়াই,— সংসারীর দুঃখ মোচন করবার ত আমাদের শক্তি নেই ভারতী । ভারতী ব্যথিত হইয়া কহিল, তোমাদের নেই, কিন্তু র্যাদের এসব আছে,— আমাদের এ দেশের লোকে কি এদের দুঃখ দূর করতে পারে না দাদা ? ডাক্তার ঈষৎ হাসিয়া বলিলেন, কিন্তু করবে কেন দিদি ? তারা ত এ কাজ Հ*Ն