পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ত্রয়োদশ সম্ভার).djvu/২৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্রক অপূৰ্ব্ব ইহারও উত্তর দিল না। শশী কহিল, অপূৰ্ব্ববাবু সন্ন্যাস নেবেন। ডাক্তার হাসিয়া ফেলিলেন, সন্ন্যাস ? এ আবার কি কথা ! র্তাহার হাসিতে অপূৰ্ব্ব ক্ষুণ্ণ হইল। কহিল, সংসারে ষার রুচি নেই, জীবন বিস্বাদ হয়ে গেছে, এ ছাড়া তার আর কি পথ আছে ডাক্তার ? ডাক্তার কহিলেন, এ সব বড় বড় আধ্যাত্মিক ব্যাপার, অপূৰ্ব্ববার, এর মধ্যে অনধিকার চর্চা করতে আমাকে আর প্রলুব্ধ করবেন না, তার চেম্বে বরঞ্চ শশীর মত নিন, ও জানে-শোনে। ইস্কুলে ফেল হয়ে একবার ও বছরখানেক ধরে এক সাধুবাবার চেলাগিরি করেছিল । শশী সংশোধন করিয়া বলিল, দেড় বছরের ওপর। প্রায় দু-বছর । সুমিত্রা ও ভারতী হাসিতে লাগিল। অপূৰ্ব্বর গাম্ভীর্ষ ইহাতে টলিল না, সে কহিল, মায়ের মৃত্যুর জন্তে আমার নিজেকেই যেন অপরাধী মনে হয়, ডাক্তার। সেদিন থেকে আমি নিরস্তুর এই কথাই ভেবে আসচি। যথার্থই সংসারে আমার প্রয়োজন নেই, এ আমার কাছে তিক্ত হয়ে এসেচে। ডাক্তার ক্ষণকাল তাহার মুখের প্রতি চাহিয়া থাকিয়া বোধ হয় তাহার হৃদরের সত্যকার ব্যথা উপলব্ধি করিলেন, সস্নেহে মৃদুকণ্ঠে বলিলেন, মানুষের এই দিকটা কখনো আমার ভেবে দেখবার আবস্তক হয়নি অপূৰ্ব্ববাবু, কিন্তু সহজ বৃদ্ধিতে মনে হয়, হয়ত, এ ভুল হবে। তিক্ততার মধ্য দিয়ে সংসার ছেড়ে শুধু হতভাগ্য লক্ষ্মীছাড়া জীবন যাপন করা চলে, কিন্তু বৈরাগ্য-সাধনা হয় না। করুণার মধ্যে দিয়ে, আনন্দের মধ্যে দিয়ে না গেলে কি—কিন্তু, ঠিক ত জানিনে— ভারতী অকস্মাৎ যেন এক নূতন জ্ঞান লাভ করিল। ব্যগ্রকণ্ঠে বলিয়া উঠিল, তুমি ঠিক জানো দাদা, তোমার মুখ দিয়ে কপনো বেঠিক কিছু বার হয় না,—হতে পারে না । এই সত্য । ডাক্তার বলিলেন, মনে ত তাই হয়। মা মারা গেলেন। কেন এসেছিলেন, কিসের জন্যে আপনি যেতে চান না, কিছুই আমি জানিনে, জানবার কৌতূহলও নেই, কিন্তু কারও আচরণে তিক্ততাই যদি পেয়ে থাকেন, সমস্ত অনাগত কালের তাই শুধু সত্য হ’ল, আর অমৃত যদি কোথায় লাভ হয়ে থাকে, জীবনে তার কোন দাম দেবেন না । অপূৰ্ব্ব কহিতে লাগিল, সংসারে দাল যদি– ডাক্তার বলিলেন, সংসারে অপূৰ্ব্বর দাদা বিনোদবাবুই আছেন, ভারতীর জাল সব্যসাচী কি নেই ? সে গৃহে যদি স্থান আপনার নাও থাকে, কলকাতার সেই ছোট্ট বাড়িটুকুই কি বামনের বিশ্বব্যাপী পদতলের স্তায় পৃথিবীতে কোথাও আপনার aw