পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ত্রয়োদশ সম্ভার).djvu/৩৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পত্র-সঙ্কলন স্তন্ধ হবার অবকাশ নেই তোমার, ফলশশু-বছল দূর ভবিষৎ এখনো তোমাকে সম্মুখে আহবান কংচে । সত্তর বছর উত্তীর্ণ করে কর্ম সাধনার অস্তিষপর্বে পোঁচেছি । কর্তব্যের চক্ররথ প্রদক্ষিণ সম্পূর্ণ করার পরেও এখনো যদি আমাকে চলতে হয় সেটা পুনরাবর্তন মাত্র। এই কারণেই অল্পদিন হোলে আমার দেশ আমার জীবনের শেষ প্রাপ্য সমারোহ করে চুকিয়ে দিয়েছে। সাধারণের কাছে আমার পরিচয় সমাপ্ত হয়ে গেছে বলেই শেষকৃত্য সম্ভবপর হয়েছে। আকাশ থেকে শ্রাবণের মেঘ তার দান যখন নিঃশেষ করে দেয় তখনি ধরাতলে প্রস্তুত হয় শরতের পুষ্পাঞ্জলি। তারপরেও মেঘ যদি সম্পূর্ণ বিভ্ৰাম না করে সেটা হয় বর্ধার পুনরুক্তি মাত্র, সেটা বাহুল্য। সেই দাড়ি-টানা সময় তোমার নয়, এখনো তুমি দেশকে প্রতিদিন নৰ নৰ রচনা-বিশ্বয়ে নব নব আনন্দ দান করবে এবং সেই উল্লাসে দেশ সঙ্গে সঙ্গে প্রত্যহ তোমার জয়ধ্বনি করতে থাকবে । পথে পথে পদে পদে তুমি পাবে প্রীতি, তুমি পাবে সমাদর। পথের দুই পাশে যে সব নবীন ফুল ঋতুতে ঋতুতে ফুটে উঠবে তারা তোমার ; অবশেষে দিনের পশ্চিমকালে সর্বজন হস্তে রচিত হবে তোমার মুকুটের জন্য শেষ বরমাল্য। সেদিন বহুদূরে থাক। আজ দেশের লোক তোমার পথের সঙ্গী, দিনে দিনে তারা তোমার কাছ থেকে পাথেয় দাবী করবে ; তাদের সেই নিরস্তর প্রত্যাশা পূর্ণ করতে থাকে। পথের চরম প্রাস্তবত্তী আমি সেই কামনা করি। জনসাধারণ সম্মানের যে যজ্ঞ অনুষ্ঠান করে তার মধ্যে সমাপ্তির শাস্তি বাচন থাকে, তোমার পক্ষে সেটা সঙ্গত নয় এ-কথা নিশ্চিত মনে রেখো । তোমার জন্মদিন উপলক্ষ্যে ‘কালের যাত্রা’ নামক একটি নাটিকা তোমার নামে উৎসর্গ করেছি। আশা করি আমার এ দান তোমার অযোগ্য হয়নি । বিষয়টি এই—রথযাত্রার উৎসবে নরনারী সবাই হঠাৎ দেখতে পেলে মহাকালের রথ অচল। মানব সমাজের সকলের চেয়ে বড় দুৰ্গতি কালের এই-গতিহীনতা । মান্থৰে মাহুষে যে সম্বন্ধ-বন্ধন দেশে দেশে যুগে যুগে প্রসারিত, সেই বন্ধনই এই রথ টানবার রশি । সেই বন্ধনে অনেক গ্রন্থি পড়ে গিয়ে মানব-সম্বন্ধ অসত্য ও অসম্মান হয়ে গেছে, তাই চলছে না বুখ। সেই সম্বন্ধের অসত্য এতকাল বাদের বিশেষভাবে পীড়িত করেছে, অবমানিত করেছে, মহন্তত্বের শ্রেষ্ঠ অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে আজ মহাকাল তাদেরই আহবান করেছেন উার রথের বাহনরূপে, তাদের অসম্মান বুঢ়লে তবেই সম্বন্ধের অসাম্য দূর হয়ে রথ সম্মুখের দিকে চলবে।