পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ত্রয়োদশ সম্ভার).djvu/৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পথের দাবী যেন তাহার কাছে শয্যাকণ্টক হইয়া উঠিল। একটা মৰ্ম্মাষ্টিক বেদন তাহার সকল অঙ্গে ফুটিতে লাগিল, এবং তাহারই মাঝে মাঝে মনে পড়িতে লাগিল স্টেশনের সেই হিন্দুস্থানী লোকগুলোকে, যাহারা সদলবলে উপস্থিত থাকিয় তাহার লাঞ্ছনার কোন অংশ লয় নাই, বরঞ্চ, তাহার অপমানের মাত্রা বাড়াইয়া তুলিতে সাহায্য করিয়াছে। দেশের লোকের বিরুদ্ধে দেশের এত বড় লজ্জা, এত বড় গ্লানি জগতের আর কোন দেশে আছে ? কেন এমন হইল ? কেমন করিয়া ইহা সম্ভব হইল ? দুই-তিন দিন নিরুপদ্রবে কাটিয়া গেল, উপরতলা হইতে সাহেবের অত্যাচার আর যখন নব-রূপে প্রকাশিত হইল না, তখন অপূৰ্ব্ব বুলি ক্রীস্টান মেয়েটা সে দিনের কথা তাহার পিতাকে জানায় নাই। এবং তাহার সেই ফল-মূল দিতে আসার ঘটনার সঙ্গে মিলাইয়া এই না-বলার ব্যাপারটা শুধু সম্ভব নয়, সত্য বলিয়াই মনে হইল। অনেক প্রকার কালে ফস1 সাহেবের দল যায় আসে, মেয়েটির সহিতও বার দুই সিড়ির পথে সাক্ষাৎ হইয়াছে, সে মুখ ফিরাইয়া নামিয়া যায়, কিন্তু সেই দুঃশাসন গৃহকর্তার সহিত একদিনও মুখোমুখি ঘটে নাই। কেবল, সে যে ঘরে আছে সেটা বুঝা যায় তাহার ভারি বুটের শৰে। সেদিন সকালে ছোটবাবুকে ভাত বাড়িয়া দিয়া তেওয়ারী হাসিমুখে কহিল, সাহেব দেখছি নালিশ ফরিদ আর কিছু করলে না। অপূৰ্ব্ব কহিল, না। যতটা গর্জার ততটা বর্ণায় না। তেওয়ারী বলিল, আমাদেরও কিন্তু বেশিদিন এ বাসায় থাকা চলবে না। ব্যাট মাতাল হলেই আবার কোন দিন ফ্যাসাদ বাধাবে । অপূৰ্ব্ব কহিল, না:–সে ভয় বড় নেই। তেওয়ারী কহিল, তা হোক, তবু মাথার ওপরে মেলেচ্ছ ক্রীশ্চান, যা সব খায়-দায়, মনে হলেই— জা; তুই খাম তেওয়ারী। সে নিজে তখন খাইতেছিল, ক্রীস্টানের খাত্রব্যের ইঙ্গিতে তাহার সর্বাঙ্গে যেন কাটা দিয়া উঠিল। কহিল, এ মাসটা গেলে উঠে ত যেতেই হবে। কিন্তু একটা ভাল বাসাও ত খুজে পাওয়া চাই। এ সময়ে ও উল্লেখ ভাল হয় নাই, তেওয়ারী মনে মনে লজ্জিত হইয়া চুপ করিয়া ब्रश्लि । לכי