পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ত্রয়োদশ সম্ভার).djvu/৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ং-সাহিত্য-সংগ্ৰহ সেইদিন বৈকালে আফিস হইতে ফিরিয়া অপূৰ্ব্ব তেওয়ারীর প্রতি চাহিয়া অবাক হইয়া গেল । সে যেন এই একটা বেলার মধ্যে শুকাইয়া অৰ্দ্ধেক হইয়া গেছে। কিন্তু তেওয়ারী ? প্রত্যুত্তরে সে আলাপিনে গাথা কয়েকখও ছাপানো হলদে রঙের কাগজ অপূৰ্ব্বর হতে দিল। ফৌজদারী আদালতের সমন, বাদী জে ডি জোসেফ, প্রতিবাদী তিন নম্বর ঘরের অপূর্ব বাঙ্গালী ও তাহার চাকর । ধারা একটা নয়, গোটা চারেক । দুপুরবেলা কোর্টের পিয়াদা জারি করিয়া গেছে, এবং কাল সকালে আর একটা জারি করিতে আসিবে। সঙ্গে সেই সাহেব ব্যাটা । হাজির হইবার দিন পরশু । অপূৰ্ব্ব নিঃশব্দে কাগজগুলো আদ্যোপ:স্ত পড়িয়া ফিরাইয়া দিয়া কহিল, তা আর হবে কি । কোর্টে হাজির হলেই হবে। তেওয়ারী কঁদ কঁাদ গলায় কহিল, কখনও যে কাঠগড়ায় উঠিনি বাৰু। অপূৰ্ব্ব বিরক্ত হইয়া বলিল, আমি কি উঠেচি না কি ? সব তাতেই কাদবি ত বিদেশে আসতে গেলি কেন ? আমি যে কিছু জানিনে ছোটবাবু! জানিসনে ত লাঠি নিয়ে বেরুতে গেলি কেন ? ঘরের মধ্যে চুপ করে বসে থাকলেই ত হোতো ! এই বলিয়া অপূৰ্ব্ব কাপড় ছাড়িতে নিজের ঘরে চলিয়া গেল। পরদিন তাহার নিজের পরওয়ানা আসিয়া পৌছিল এবং তাহার পরদিন তেওয়ারীকে সঙ্গে লইয়। যথাসময়ে আদালতে উপস্থিত হইল। নালিশ মকদ্দমার কোন অভিজ্ঞতাই তাহার ছিল না, বিদেশ, কোন লোকের সহিত আলাপ-পরিচয় নাই, কাহার সাহায্য লইতে হয়, কি করিয়া তদ্বির করিতে হয় কিছুই জানে না, তবুও কোন ভয়ই হইল না । হঠাৎ কি করিয়া যে তাহার মন এমন শক্ত হইয়া গেল সে নিজেই ভাবিয়া পাইল না । এ বিষয়ে রামদাসকে কোন কথা বলিতে, কোন সাহায্য চাহিতে তাহার লজ্জা বোধ হইল। শুধু কাজের অজুহাতে সাহেবের কাছে সে একটা দিনের ছুটি লইয়া আসিয়াছিল। যথা সময়ে ডাক পড়িল। ডেপুটি কমিশনার নিজের ফাইলেই মকদ্দমা রাখিয়াছিলেন। বাদী জোসেফ সাহেব সত্য মিথ্যা যা খুশি এজাহার দিয়া গেল, প্রতিবাদীর উকিল ছিল না, অপূৰ্ব্ব নিজের জবাবে একটি কথাও গোপন করিল না, একটা কথাও বাড়াইয়া বলিল না। বাদীর সাক্ষী তার মেয়ে, আদালতের মাঝখানে এই মেয়েটির নাম এবং বিবরণ শুনিয়া অপূৰ্ব্ব স্তন্ধ হইয়া রহিল। ইনি কোন এক স্বৰ্গীয় রাজকুমার ভট্টাচার্ঘ্যের কন্ঠ, বাটা পূৰ্ব্বে ছিল বরিশাল, এখন বাঙ্গালোর। নিজের নাম মেরি-ভারতী ; ভট্টাচাৰ্য্য মহাশয়, নিজেই স্বেচ্ছায় অন্ধকার হইতে בס\