পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ত্রয়োদশ সম্ভার).djvu/৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

o আশ্চৰ্য্য এই যে, এত বড় সব্যসাচী ধরা পড়িল না। কোন দুর্ঘটনা ঘটিল না, এমন সৌভাগ্যকেও অপূৰ্ব্বর মন যেন গ্রাহই করিল না। বাসায় ফিরিয়া দাড়ি গোফ কামানো হইতে শুরু করিয়া সন্ধ্যাহিক, স্নানাহার, পোষাকপরা, আফিস যাওয়া প্রভৃতি নিত্য কাজগুলায় বাধা পাইল না সত্য, কিন্তু ঠিক কি যে সে ভূবিতে লাগিল তাহার নির্দেশ নাই, অথচ চোখ কান ও বুদ্ধি তাহার সাংসারিক সকল ব্যাপার হইতে একেবারে যেন বিচ্ছিন্ন হইয়া কোন এক অদৃষ্ট অপরিজ্ঞাত রাজবিদ্রোহীর চিস্তাতেই ধ্যানস্থ হইয়া রহিল । এই অত্যন্ত অন্যমনস্কতা তলওয়ারকর লক্ষ্য করিয়া চিস্তিতমুখে জিজ্ঞাসা করিল, আজ বাড়ি থেকে কোন চিঠি পেয়েচেন না কি ? কই না । বাড়ির খবর সব ভাল ত ? অপূৰ্ব্ব কিছু আশ্চর্ঘ্য হইয়া কহিল, যতদূর জানি সবাই ভালই ত আছেন। রামদাস আর কোন প্রশ্ন করিল না । টিফিনের সময় উভয়ে একত্রে বসিয়া জলযোগ করিত। রামদাসের স্ত্রী অপূৰ্ব্বকে একদিন সনিৰ্ব্বন্ধ অনুরোধ করিয়াছিলেন, যতদিন তাহার মা কিংবা বাটীর আর কোন আত্মীয়া নারী এদেশে আসিয়া বাসার উপযুক্ত ব্যবস্থাদি না করেন, ততদিন এই ছোট বহিনের হাতের তৈরি যৎসামান্য মিষ্টান্ন প্রত্যহ তাহাকে গ্রহণ করিতেই হইবে। অপুৰ্ব্ব রাজি হইয়াছিল। অফিসের একজন ব্রাহ্মণ পিয়াদা এই সকল বহিয়া আনিত । আজও সে নিরালা পাশের ঘরটায় ভোজ্যবস্তুগুলি যখন সাজাইয়া দিয়া গেল, তখন আহারে বসিয়া অপুৰ্ব্ব নিজেই কথা পাড়িল। কাল তাহার ঘরে চুরি হইয়া গেছে; সমস্তই যাইতে পারিত কেবল উপরের সেই ক্রীশ্চান মেয়েটির কৃপায় টাকাকড়ি ছাড়া , আর সমস্ত বাচিয়াছে। সে চোর তাড়াইয়া দরজায় নিজের তালা বন্ধ করিয়াছে, আমি বাসায় পৌঁছিলে চাবি খুলিয়া দিয়া অনাহুত আমার ঘরে ঢুকিয়া ছড়ানো জিনিসপত্র গুছাইয়া দিয়াছে- সমস্ত ফর্দ করিয়া কি আছে আর কি গেছে তার এমন নিখুঁত হিসাব করিয়া দিয়াচে যে, বোধ হয় তোমার মত পাশ করা একাউন্টেন্টের পক্ষেও তা বিস্ময়কর,-বাস্তবিক এমন তৎপর, এতবড় কাৰ্য্যকুশলা মেয়ে আর যে কেহ আছে মনে হয় না হে, তলওয়ারকর । তা ছাড়া এত-বড় বন্ধু ! রামদাস কহিল, তারপর ? অপূৰ্ব্ব কহিল, তেওয়ার ঘরে ছিল না, বর্মী-নাচ দেখতে ফায় গিয়েছিল, tR