পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দশম সম্ভার).djvu/১০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ষোড়শী [ প্রফুল্প সম্মুখের বাতায়ন খুলিয়া দিল এবং কাছে আসিয়া জীবানন্দের ইঙ্গিত-মত র্তাহার মাথাটি সযত্নে উচু করিয়া দিল। অদূরে * বারুইয়ের শীর্ণ জলধারা মন্দবেগে বহিতেছে। পরপারে স্বধ্য অস্তগমনোন্মুখ। দূরে নীল বনানী আরক্ত আভায় রঞ্জিত। তটে ধূসর বালুকারাশি উজ্জল হইয়া উঠিয়াছে । ] * . জীবানন্দ । ( চোখ মেলিয়া কম্পিত দুই হস্ত যুক্ত করিয়া ললাটে স্পর্শ করাইলেন। ক্ষণকাল স্তব্ধভাবে থাকিয় ) বিশ্বদেব ! কে বলে তুমি অচেনা ? তুমি চির-রহস্তে ঢাকা ? জন্মাস্তরের সহস্র পরিচয় যে আজ যাবার দিনে তোমার মুখে স্পষ্ট দেখতে পেলাম ! ( একমুহূৰ্ত্ত নীরব থাকিয় ) ভেবেছিলাম হয়ত তোমাকে দেখে ভয় হবে— হয়ত এ-জীবনের শতেক গ্লানি দীর্ঘ কালো ছায়া মেলে আজ মুখ তোমার ঢেকে দেবে, কিন্তু সে ত হতে দাওনি ! বন্ধু, এ-জন্মের শেষ নমস্কার’ তুমি গ্রহণ কর । ( শ্রাস্তিতে ঢলিয়া পড়িয়া ) উঃ—কি ব্যথা ! প্রফুল্ল (ব্যাকুল-কষ্ঠে ) ব্যথা কোথায় দাদা ? জীবানন্দ । কোথায় ? মাথায়, বুকে, আমার সর্বাঙ্গে, প্রফুল্ল—উঃ [ দ্রুতপদে ষোড়শী প্রবেশ করিল। তাহার পশ্চাতে এককড়ি ও বল্লভ ডাক্তার ] ষোড়শী । একি কথা এরা সব বলে প্রফুল্ল ! ( জীবানন্দের পদতলে বসিয়া পড়িল ) ষোড়শী । তোমাকে নিয়ে যাবার জন্যে যে আজ সমস্ত ছেড়ে চলে এসেচি ! কিন্তু নিষ্ঠুর—অভিমানে এ কি করলে তুমি! প্রফুল্ল। দাদা, চেয়ে দেখুন অলকা এসেছেন। জীবানন্দ । অলকা ? এলে তুমি ? ( ধীরে ধীরে মাথা নাড়িয়া) কিন্তু সময় 6नझे अद्रि ! ষোড়শী। কিন্তু, এই যে সেদিন বললে, তুমি সংসারে বাঁচতে চাও—মানুষের মাঝখানে মাহুষের মত হয়ে । তুমি বাড়ি চাও, ঘর চাও, স্ত্রী চাও, সস্তান চাও— জীবানন্দ । ( মাথা নাড়িয়া ) না । আজ ফাকি দিয়ে আর কিছুই চাইনে অলকা। চিরদিন কেবল ফাকি দিয়ে পেয়ে পেয়েই স্পৰ্দ্ধা বেড়ে গিয়েছিল, ভেবেছিলাম এমনিই বুঝি। কিন্তু আজ তার কৈফিয়ং দেবার দিন এসেচে। । ষে সৌভাগ্য এ-জীবনে অর্জন করিনি অলক, সেই ত ঋণ—সে বোঝা আর যেন প্লামার না বাড়ে । קק