পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দশম সম্ভার).djvu/১৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ ওপর এত টান! বেদে পুরাণে যা কম্মিনকালে কখনো ঘটেনি, তাই হবে এই ঘোর কলিকালে! স্বতরাং এতদিন তিনি শুধু মুখ বুজিয়া কৌতুক দেখিতেছিলেন, কাহাকেও কোন কথা বলেন নাই। আবশ্বক কি ! বেশ জানিতেন একদিন সমস্ত প্রকাশ পাইবেই। এখন দেখ তোমরা—এই এত ভালো, অত ভালো,–গোকুলের সম্বন্ধে যা আমি বরাবর ভেবে এসেচি, ঠিক তাই কি না ! * কিন্তু কি এতদিন তিনি ভাবিয়া আসিয়াছিলেন, তাহা কাহারও কখন জানা ছিল না, তখন সকলকেই নীরবে তাহার প্রাজ্ঞতা স্বীকার করিয়া লইতে হইল এবং দেখিতে দেখিতে খড়ের আগুনের মত কথাটা মুখে মুখে প্রচার হইয়া গেল । অথচ গোকুল টের পাইল না- যে, বাহিরের বিরুদ্ধ আন্দোলন তাহার বিপক্ষে এত সত্বর এরূপ তীব্র হইয়া উঠিল । ভবানী চিরদিনই অল্প কথা কহিতেন । তাহাতে কাল রাত্রি হইতে ব্যথার ভারে র্তাহার হৃদয় একেবারেই স্তব্ধ হইয়া গিয়াছিল। গোকুলের স্ত্রী মনোরমা একসময়ে স্বামীকে নিজনে ভাকিয়৷ এইদিকে তার দৃষ্টি আকৃষ্ট করিয়া কহিল, মার ভাবগতিক দেখচ ? গোকুল উদ্বিগ্ন হইয়া বলিল, না ! কি হয়েচে মার ? 峰 মনোরম তাচ্ছিল্যুভরে বলিল, হবে আবার কি ! সেই যে কাল বলেছিলুম ঠাকুরপোর টাকা নষ্ট করার কথা—সেই থেকে আমার সঙ্গে কথা ক’ন না। তোমার সঙ্গে কথা-টথা কইচেন ত ? গোকুল শুষ্ক হইয়া কহিল, না, আমার সঙ্গেও না । মনোরম ঘাড়টা একটুখানি হেলাইয়া, কণ্ঠস্বর আরও নীচু করিয়া বলিল, দেখলে মজা! যে টাকাগুলো ঠাকুরপো দু'হাতে উড়িয়ে দিলে, সেগুলো থাকলে ত আমাদেরই থাকত। ঠাকুর ত আমাদেরই সব লিখে দিয়ে গেচেন। আমাদের তিনি সৰ্ব্বনাশ করবেন—আর সে-কথা একটু মুখ থেকে খসালেই রাগ করে কথাবার্তা বন্ধ করে দিতে হবে ? এইটে কি ব্যবহার ? তুমি ত 'মা' 'মা' করে অজ্ঞান, তুমিই বল না, সত্যি না মিছে ? - গোকুলের মুখখান একেবারে কালিবর্ণ হইয়া গেল। কোনরকম জবাবই সে খুজিয়া পাইল না। তাহার স্ত্রী বোধ করি তাহ লক্ষ্য করিয়াই কহিল, ঠাকুরপো ঘাই করুক আর যাই হোক, সে পেটের ছেলে। তুমি সতীন-পো বই নয়। তুমি পেলে সমস্ত বিষয়—এ কি কোন মেয়েমানুষের সহ হয় ? না না, আমার সব কথা অমন Σ 3 ο